Cyclone Dana in Odisha

‘দানা’র ভয়ে ঘুম উড়েছে ওড়িশার জগৎসিংহপুরে! মনে পড়ে যাচ্ছে সেই ‘সুপার সাইক্লোন’-এর ধ্বংসলীলা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা। ওড়িশার পুরী এবং পশ্চিবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে সেটি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১২:০৭
Share:

উপকূলের দিকে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে। উত্তাল হচ্ছে ওড়িশার সমুদ্র। ছবি: পিটিআই।

ওড়িশা আর ঘূর্ণিঝড় এখন যেন সমার্থক হয়ে গিয়েছে। আবারও একটি ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে এই রাজ্যে। ফলে আবারও ক্ষয়ক্ষতি আর প্রাণহানির আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ছে ওড়িশার উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে। তার মধ্যে একটি হল জগৎসিংহপুর। ‘দানা’ যত উপকূলের দিকে এগোচ্ছে, ততই ভয় বাড়ছে জগৎসিংহপুরের এরসামা ব্লকের পরমপুর গ্রামের।

Advertisement

সমুদ্র থেকে ৪০০ মিটার দূরে এই গ্রাম। ১৯৯৯ সালে ওড়িশার বুকে যখন ‘সুপার সাইক্লোন’ আছড়ে পড়েছিল, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল জগৎসিংহপুর। সমুদ্রের অদূরে হওয়ায় পদমপুর গ্রাম তছনছ হয়ে গিয়েছিল এই ‘সুপার সাইক্লোন’-এর অভিঘাতে। বহু প্রাণহানি হয়েছিল এই গ্রামে। সমুদ্রে ভেসে গিয়েছিলেন অনেক গ্রামবাসী। ঘটনাচক্রে, এই ঘূর্ণিঝড়ে যে জেলাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছিল জগৎসিংহপুরেই। এই জেলায় ‘সুপার সাইক্লোন’-এ মৃত্যু হয়েছিল ৮,১১৯ জনের। তার পরই ছিল কটক (৪৭১) এবং কেন্দ্রাপাড়া (৪৬৯)।

ফলে আবার একটি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ধেয়ে আসতেই ১৯৯৯ সালের স্মৃতি রোমন্থন শুরু হয়ে গিয়েছে জগৎসিংহপুরের পরমপুর গ্রামে। ভয়ে কাঁটা গোটা গ্রাম। তাই সমুদ্রে ‘দানা’ দানা বাঁধার খবর পাওয়ার পর থেকেই এই গ্রাম এবং জগৎসিংহপুরের সমুদ্রলাগোয়া এলাকাগুলিতে ঘুম উড়ে গিয়েছে বাসিন্দাদের। গত কয়েক দিন ধরেই বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

পরমপুর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘১৯৯৯ সালে সুপার সাইক্লোনে আমরা অনেক কিছু হারিয়েছি। সেই স্মৃতি আজও তাজা মনের কোণে। চোখের সামনে প্রিয়জনদের, পরিচিতদের মৃত্যু দেখেছি। সমুদ্রে বিশাল ঢেউ এসে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল বাড়ির পর বাড়ি। অনেকে গাছে উঠে নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছেন।’’ আরও একটি ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসায় মৃত্যুভয় আবার ঘিরে ধরছে তাঁদের। তাঁর কথায়, ‘‘আবার একটি ঘূর্ণিঝড় আসছে। আমরা খুব ভয়ে রয়েছি। আগের ঘূর্ণিঝড়ের পরিণতির কথা মনে আসতেই কেঁপে উঠছি। কী ভাবে এই ঘূর্ণিঝড় থেকে রেহাই পাব জানি না।’’

আরও কয়েক জন বাসিন্দা জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কাছাকাছি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁদের কথায়, ‘‘রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। যদি আবারও সমুদ্র এসে সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়, সেই ভয়ে রাত জেগে বসে থাকছি।’’

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ওড়িশার পুরী এবং পশ্চিবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে বলে মৌসম ভবন সূত্রে খবর। আছড়ে পড়ার সময় এটির সর্বাধিক গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার সর্বাধিক গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিমি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement