শনিবার ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া জেলায় বিপর্যয় কবলিত এক গ্রামে খাবার বিলি করছে ভারতীয় নৌসেনা। ছবি: পিটিআই।
ঘুর্ণিঝড় ‘ডেনা’র প্রভাবে ঝড়বৃষ্টির কারণে ওড়িশার ১৪ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার জেরে সে রাজ্যের প্রায় ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রবিবার এই তথ্য জানান ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী সুরেশ পূজারি। তবে বিপর্যয়ের কারণে এখনও পর্যন্ত ওড়িশার কোথাও কোনও মৃত্যুর খবর নেই। বিপর্যয় মোকাবিলায় ওড়িশার বিভিন্ন প্রান্তে ছ’হাজার ২১০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। সেগুলিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন আট লাখ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের আগেই ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়তে শুরু করেছিল ‘ডেনা’ ঘূর্ণিঝড়। ‘ল্যান্ডফল’-এর প্রক্রিয়া চলেছিল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কোথায় কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই তথ্যও তুলে ধরেন ওড়িশার বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বালেশ্বর, ভদ্রক এবং কেন্দ্রাপাড়া জেলায়। এ ছাড়া জজপুর, ময়ূরভঞ্জ জেলাতেও প্রচুর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ওড়িশার ১১৭৮টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে বিপর্যস্ত এলাকার মানুষেরা আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানেই তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র প্রভাবে অন্তত ১৪টি জেলার ১৬৭১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেক মানুষ ঘরছাড়া রয়েছেন। তাঁদের জন্য ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওড়িশা সরকারের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে প্রায় পাঁচ হাজার ৮৪০টি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগেও ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় বা অন্য কোনও বিপর্যয়ের সময়ে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে অতীতে। কিন্তু সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি। এ বার তাই স্থায়ী সমাধানের চিন্তাভাবনা চালাচ্ছে ওড়িশা সরকার। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ে উল্লেখ, ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতে কত কাঁচা বাড়ি রয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে ওড়িশা সরকারের।
শনিবারও ওড়িশায় বিপর্যয় কবলিত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ চলেছে। পিটিআইয়ে উল্লেখ, শনিবার বেশি রাতের দিকে ভদ্রকের একটি গ্রাম থেকে অন্তত ২৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকাগুলিতে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা সরেজমিন পরিদর্শনে ওড়িশায় যেতে পারে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলও। তার আগে বিশেষ ত্রাণ কমিশনারকে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে ওড়িশার সরকার।