স্ত্রীর দেহ কাঁধে নিয়ে হাঁটছেন সামুলু। ছবি: সংগৃহীত।
চিকিৎসায় সাড়া না দেওয়ায় হাসপাতাল জানিয়ে দিয়েছিল স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যান। অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে অটোয় চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের সামুলু পাঙ্গি। কিন্তু কিছুটা পথ যেতেই স্ত্রীর মৃত্যু হয়। মহিলার মৃত্যুর পরই অটোচালক জানিয়ে দেন, তিনি আর যেতে পারবেন না। অগত্যা স্ত্রীর দেহ কাঁধে নিয়ে ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন সামুলু।
ওড়িশার কোরাপুটের বাসিন্দা সামুলু। তাঁর স্ত্রী গুরু বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে পার্শ্ববর্তী রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের একটি হাসপাতালে ভর্তি করান সামুলু। সেখানে কয়েক দিন চিকিৎসা হয় গুরুর। কিন্তু দু’দিন আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সামুলুকে জানিয়ে দেন, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না তাঁর স্ত্রী। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ১০০ কিলোমিটার দূরে। তাই একটি অটো ভাড়া করেছিলেন সামুলু।
কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর অটোতেই মৃত্যু হয় সামুলুর স্ত্রীর। অভিযোগ, এর পরই অটোচালক তাঁদের মাঝরাস্তায় ছেড়ে দিয়ে চলে যান। ফাঁকা রাস্তায় কোনও যানবাহন দেখতে না পেয়ে শেষমেশ স্ত্রীর দেহ কাঁধে তুলে গ্রামের উদ্দেশে হাঁটতে শুরু করেন সামুলু। এ ভাবে ৮০ কিলোমিটার পথ হাঁটেন তিনি। গ্রামে পৌঁছতে আর মাত্র ২০ কিলোমিটার পথ বাকি ছিল। পুলিশের কাছে খবর পৌঁছয় যে, এক ব্যক্তি কাঁধে দেহ নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এর পরই সামুলুর জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ।
এই ঘটনাই স্মৃতি উস্কে দিয়েছে দানা মাঝির। ২০১৬ সালের যে ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, দানা মাঝিও ওড়িশার বাসিন্দা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দিতে বলেছিলেন হতদরিদ্র দানা মাঝি। অভিযোগ উঠেছিল, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেননি। গাড়ি ভাড়া করে স্ত্রীর দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্যও ছিল না তাঁর। অগত্যা স্ত্রীর দেহ কাঁধে নিয়ে ২১ কিলোমিটার পথ হেঁটে বাড়ি পৌঁছন তিনি।