পুরীর জগন্নাথ মন্দির। — ফাইল চিত্র।
এ বার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মহাপ্রসাদ বিনামূল্যে ভক্তদের মধ্যে বিলি করার পথে হাঁটছে ওড়িশা সরকার। সম্প্রতি এই ঘোষণা করে রাজ্যের আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দ্রন জানিয়েছেন, শীঘ্রই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার কথা ভাবছেন তাঁরা।
পৃথ্বীরাজ বলেন, ‘‘পুরীর মন্দিরের মহাপ্রসাদ পেতে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। আমরা শীঘ্রই তাঁদের বিনামূল্যে মহাপ্রসাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারি কি না, তা ভেবে দেখা হচ্ছে।’’ তিনি আরও জানান, সাধারণ দিনেই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ৫০ হাজারের কাছাকাছি মানুষ ভিড় করেন। আর উৎসব থাকলে প্রতি দিন ভক্তসংখ্যা পৌঁছয় দেড় থেকে দু’লাখে!
এত মানুষকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মহাপ্রসাদ দেওয়া সম্ভব? মন্দিরের কর্মীরা জানাচ্ছেন, রীতি অনুযায়ী জগন্নাথকে নিবেদনের যে মহাপ্রসাদ, তা বিক্রির জন্য নয়। কিন্তু সুয়ারা এবং মহাসুয়ারাদের তৈরি মহাপ্রসাদ মন্দিরের ভিতরেই আলাদা করে বিক্রি হয়। এই প্রসাদের দাম নির্ভর করে ভক্তদের সংখ্যা এবং চাহিদার উপর। এখন বিনামূল্যে মহাপ্রসাদ দিতে গেলে দু’টি বিষয় হতে পারে। এক, সুয়ারা এবং মহাসুয়ারাদের তৈরি প্রসাদই ভক্তদের মধ্যে বিলি করা হতে পারে। অথবা, সরকার উদ্যোগ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে মহাপ্রসাদ তৈরি করে ভক্তদের বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু ঠিক কী করা হবে, তা এখনও সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
তবে সরকারের এই ভাবনাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন অনেকেই। মনে করা হচ্ছে, বিনামূল্যে মহাপ্রসাদ বিলি করা হলে অনেকেরই সুবিধা হবে। মহাপ্রসাদ পাবেন গৃহহীন এবং দরিদ্রেরাও। এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সুয়ারা-মহাসুয়ারা নিযোগের সভাপতি পদ্মনাভ মহাসুয়ারাও। তিনি বলেন, ‘‘আমরাও এই প্রস্তাবে খুশি। ২০১৭ সালেও এমন একটি উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন যদি আবার ভক্তদের বিনামূল্যে প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়, তা হলে ভালই হবে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে এই উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সরকারি সাহায্য প্রয়োজন।’’