ফাইল চিত্র।
নীতীশ কুমারের জেডিইউ বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পরে খেলা আবার জমে গেল রাজ্যসভায়। সংসদের উচ্চকক্ষে এনডিএ-র সাংসদ সংখ্যা কমে বিরোধী সাংসদদের সম্মিলিত সংখ্যার কাছাকাছি চলে এল। ‘আপত্তির’ বিল পাশ করানোর বিরোধিতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যসভা অচল করতে হলে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে-সহ বিরোধীরা এখন আগের চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে অধিবেশন কক্ষে নামতে পারবে। তাই আগামী শীতকালীন অধিবেশন থেকেই নতুন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের উপস্থিতিতে রাজ্যসভা গরম হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যা ৯১ এবং এডিএমকের ৪। এর সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট ছোট দল এবং বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী মিলিয়ে এনডিএ-র মোট সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১১৪। অন্য দিকে বিরোধীদের সম্মিলিত আসন ১০৭। ফারাক মাত্র সাতের। সেটা গলার আওয়াজে পুষিয়ে দেওয়া যাবে বলেই মনে করছেন বিরোধী সাংসদেরা। বিরোধীদের এই ১০৭টি আসন বিজেডি (৯) এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস (৯)-কে বাদ দিয়েই ধরছেন কংগ্রেস এবং তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ, এই দলগুলি অধিবেশন কক্ষে বিজেপিকে খোলাখুলি সমর্থন না করলেও ভোটাভুটি থেকে বিভিন্ন প্রসঙ্গে শাসক দলকে নীরবে সমর্থনই করে গিয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বিজেডি বা ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো দলের ‘আনুগত্য’ পাওয়া এক বিষয়। কিন্তু বর্তমানে সংখ্যার হিসাবে রাজ্যসভায় টায়ে-টায়ে থাকা বিজেপির জগন্মোহন রেড্ডি অথবা নবীন পট্টনায়কের উপরে অতিরিক্ত নির্ভরতা অন্য কথা।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, যখনই বিজেপি রাজ্যসভায় এই দুই দলের উপরে অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়বে, তারাও (বিশেষ করে ওয়াইএসআর কংগ্রেস) বিনিময়ে কিছু না কিছু রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিজেপির উপরে চাপ দেবে, যা নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের খুব কাঙ্ক্ষিত না-ও হতে পারে।
মহারাষ্ট্রে শিবসেনাকে ভাঙতে বিজেপি সফল হলেও তাতে রাজ্যসভায় তাদের খুব একটা সুবিধা হবে না। তার কারণ, শিবসেনার যে তিন জন সাংসদ রাজ্যসভায় রয়েছেন, তাঁরা উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে থাকাই মনস্থ করেছেন।
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, “রাজ্যসভায় খেলা হবে কাঁটায় কাঁটায়। আর শীতকালীন অধিবেশনের এখনও ছ’মাস বাকি রয়েছে। তার আগে কত কী ঘটে যায়, সেটাও দেখতে হবে!” রাজ্যসভায় এখন মোট খালি আসনের সংখ্যা ৮। তার মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের ৪টি এবং ত্রিপুরার একটি। এই আসনগুলি বিজেপিই পাবে।