—প্রতীকী ছবি।
কোভিডের কারণে বছরের বেশির ভাগ সময়েই লকডাউন ছিল। কিন্তু তাতেও জাল নোটের দাপট কমেনি। অর্থ মন্ত্রক আজ সংসদে জানিয়েছে, ২০২০-তে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজারের বেশি জাল নোট ধরা পড়ায় বলতেই হচ্ছে— আগের দু’বছরের তুলনায় জাল নোটের আধিক্য কোভিডের বছরে অনেকখানিই বেড়েছে।
২০১৬-তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের ঘোষণা করে দাবি করেছিলেন, এতে দেশ থেকে কালো টাকার সঙ্গে সঙ্গে জাল নোটও মুছে যাবে। কিন্তু নোট বাতিলের চার-পাঁচ বছর পরে সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, জাল নোটের সংখ্যা মুছে যাওয়া দূরের কথা, বেড়েছে। ২০১৮ ও ২০১৯-এ যথাক্রমে ২.৬১ লক্ষ ও ২.১৯ লক্ষ জাল নোট ধরা পড়েছিল। ২০২০-তে কোভিডের বছরে আটক জাল নোটের সংখ্যা বেড়ে ৮.৩৪ লক্ষে পৌঁছেছে। ২০১৬-র ৮ নভেম্বর ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরে ২ হাজার টাকার নোট চালু হয়েছিল। গত বছরও জাতীয় অপরাধ পরিসংখ্যান বুরো জানিয়েছিল, যত জাল নোট ধরা পড়ছে, তার মধ্যে ২ হাজার টাকার জাল নোটের সংখ্যাই বেশি। নোট বাতিলের পরে ২ হাজার টাকার নোট চালু করে সরকার দাবি করেছিল, এই নোট জাল করা মুশকিল হবে।
নোট জাল হওয়া ঠেকাতে এ বার ২ হাজার টাকার ধীরে ধীরে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও আজ অর্থ মন্ত্রক জল্পনা উস্কে দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রক লোকসভায় প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, গত দু’বছরে ২ হাজার টাকার নোট ছাপার কোনও বরাত দেওয়া হয়নি। নোট বাতিলের বছরে প্রায় ৩৫৪ কোটি ২ হাজার নোট ছাপা হয়েছিল। ২০১৮-র মার্চে বাজারে ৩৩৬ কোটি ২ হাজারের নোট ছিল। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে তা ২৪৯ কোটিতে নেমে এসেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-য় ২.৬১ লক্ষ জাল নোট ধরা পড়েছিল। ২০১৯-এ প্রায় ২.১৯ লক্ষ জাল নোট ধরা পড়েছে। তার মধ্যে ৯০ হাজারের বেশি ২ হাজারের নোট। বিরোধীরা এই তথ্য দেখে প্রশ্ন তুলেছেন, তা হলে নোট বাতিল করে লাভটা কী হল? এতে উল্টো ২ হাজারের নোট ছাপিয়ে নোট জাল করার সুবিধা করে দেওয়া হল। শুধু পুলিশ ও তদন্তকারী সংস্থার হাতে ধরা পড়া নয়, এর বাইরে ব্যাঙ্কেও বহু জাল নোট চিহ্নিত হয়েছে। ২০১৯-২০-তেই ২.৯৬ লক্ষ জাল নোট চিহ্নিত হয়েছে। বিরোধীদের যুক্তি, যদি আটক জাল নোটের সংখ্যা এত বেশি হয়, তা হলে বাস্তবে বাজারে আরও কত জাল নোট রয়েছে!