অমেঠী থেকে দিল্লিতে ফিরে বিমানবন্দরের বাসে সাধারণের মাঝে রাহুল গাঁধী। ছবি: টুইটার।
লোকসভা ভোটের দু’বছর আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া দাপিয়ে বেড়াত এক ‘অতিকায় ব্যক্তিত্ব’ আর এক ‘পাপ্পু’। যথাক্রমে নরেন্দ্র মোদী আর রাহুল গাঁধী। সেই প্রচার-দৌড়ে বিজেপির থেকে এত দিন অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও এ বারে আটঘাট বেধেই সোশ্যাল মিডিয়ার যুদ্ধে নামছেন রাহুল। এবং অল্প কয়েক মাসেই কংগ্রেসের প্রচার কৌশল যে বিজেপিকে বেগ দিতে শুরু করেছে, সেটি কবুল করছেন গেরুয়া শিবিরের অনেক নেতাও।
রাহুল দলকে নির্দেশ দিয়েছেন, মোদীর মতো তাঁকে এক ‘অতিকায় মানব’ হিসেবে মেলে ধরতে হবে না। বিজেপির মতো ভাড়াটে সৈনিক দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়াল ছয়লাপ করতে হবে না। কোনও প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে ‘লাইক’ বা ‘হিট’ বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নামতে হবে না। কিংবা কোনও ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্ট খুলে অপশব্দের ঝুলি উপুর করে বিরোধীদের আক্রমণের পথেও যেতে হবে না।
এত যদি ‘না’-এর দাওয়াই, বিজেপিকে তবে মাত দেওয়া হবে কোন পথে? সেটিও স্পষ্ট করেছেন রাহুল। দক্ষিণের অভিনেত্রী দিব্যা স্পন্দনাকে ইতিমধ্যেই নিয়ে এসেছেন সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বে। অমেঠীতে প্রচারে যাওয়ার আগেই সব রাজ্য থেকে আসা দলের সোশ্যাল মিডিয়ার সংযোজকদের সঙ্গে দিল্লিতে কংগ্রেসের ‘ওয়ার-রুমে’ বন্ধঘর বৈঠক করেছেন। সেখানেই জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির থেকেও শক্তিশালী হতে হবে। কিন্তু বিজেপি যা করে, তার থেকে আলাদা হতে হবে কংগ্রেসকে।
কী ভাবে?
রাহুলের মন্ত্র, সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের যাবতীয় বার্তা পৌঁছে দিতে হবে গোটা দেশের ৯ লক্ষ ৩০ হাজার বুথ পর্যন্ত। কংগ্রেস ও রাহুলের সব টুইট নিয়মিত রি-টুইট করতে হবে। বুথ স্তর পর্যন্ত পৌঁছতে হবে কংগ্রেসের বার্তা। শর্ত হলো, বিজেপির মতো ‘ভাড়া’ করা লোক নয়, এগুলি করবেন গোটা দেশের কংগ্রেস কর্মীরাই। তার জন্য এআইসিসি থেকে রাজ্য, জেলা, বুথ স্তর পর্যন্ত পৃথক সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি হবে। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে এই কাজ। তার পরে ফের বৈঠক করবেন রাহুল।
দিব্যার মতে, ‘‘এটি ঠিক যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দাপিয়ে বেড়োনোর কাজটি বিজেপি অনেক আগে জোরালো ভাবে করেছে। কংগ্রেসের কাছে বিজেপির মতো অর্থ নেই, কিন্তু মানুষ আছেন। রাহুল গাঁধী শুধু বলেছেন, সত্য প্রচার করুন।’’ পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীও দেখা করেছেন রাহুলের সঙ্গে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের প্রচার নিয়ে সক্রিয় তিনিও।
রাহুলের বৈঠকে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের সোশ্যাল মিডিয়ায় কো-অর্ডিনেটর অনুপম ঘোষ বলেন, ‘‘মোদী সরকারের ব্যর্থতা, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়া এবং নানা বিষয়ে কংগ্রেসের অবস্থান জানানোই আমাদের লক্ষ্য। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের জনবিরোধী নীতি ও বিরোধী দলের উপরে তৃণমূলের দমনের রাজনীতির বিরোধিতাও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে এআইসিসি।’’