চলবে এ বার এই নোটও।
বাড়িতে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম মেটাতে ‘ডেলিভারি বয়’কে ৫০০ টাকার একটি নোট দিয়েছিলেন বেলঘরিয়ার এক বাসিন্দা। ছোট করে দু’টি সংখ্যা লেখা ছিল সেই নোটে। তাঁর দাবি, নোটটি তাঁর হাতে আসার আগেই তাতে এই লেখাটি ছিল। কিন্তু ওই লেখাটুকুর জন্য সেই নোট ‘অচল’ বলে ওই সিলিন্ডার-বাহক ও গ্যাসের দোকান নিতে চায়নি।
বিভিন্ন অঙ্কের টাকার নোটে কিছু লেখা থাকলে বা ‘স্টেপল’ করার দাগ থাকলেই সেগুলি নিয়ে মাঝেমধ্যে এমন বিভ্রাট চলছে। আমজনতার একাংশের অভিযোগ, অনেক সময় ব্যাঙ্কও এ রকম নোট ফিরিয়ে দিচ্ছে। ব্যাঙ্কের আবার পাল্টা দাবি, ‘অচল’ বলে গ্রাহকেরাই কাউন্টার থেকে সেই নোট নিচ্ছেন না। অথচ এমন নোট ব্যবহারযোগ্য নয় বা সে’টি অচল— এমন কোনও সরকারি নির্দেশই নেই! রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) বা কোনও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক, কেউই কখনও এমন নির্দেশ দেয়নি।
আরবিআই-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বৈধ নোটে কিছু লেখা থাকলে সে’টি অচল, এমন কোনও নির্দেশ শীর্ষ ব্যাঙ্ক দেয়নি। আমজনতা অনায়াসে সে রকম নোট ব্যবহার করতে পারেন। এ নিয়ে কোনও ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে কারও অভিযোগ থাকলে সেই ব্যাঙ্কের উচ্চস্তরে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। তাতেও সন্তুষ্ট না-হলে আরবিআই-এর ‘ওম্বুডসম্যান’-এর কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন।
আরও পড়ুন: হ্যাকারদের কবলে ৭১ কোটি ইমেল আইডি, আপনারটা সুরক্ষিত তো?
পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামানে স্টেট ব্যাঙ্কের চিফ জেনারেল ম্যানেজার (কলকাতা সার্কেল) পার্থপ্রতিম সেনগুপ্তও জানিয়েছেন— লেখা থাকলেই সেই নোট অচল, এমন কোনও নির্দেশ নেই। তবে তিনি বলেন, ‘‘শুধু ব্যাঙ্ক নয়, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেও তাঁদের লেনদেনের ক্ষেত্রে এমন নোট ব্যবহার করতে হবে। শুধু ব্যাঙ্কের উপর দায় চাপালে হবে না।’’
নির্দেশ না-থাকলেও তা হলে কেন এ বিভ্রাট? ব্যাঙ্কিং শিল্পের দাবি, কেউ কেউ হয়তো আরবিআই-এর ‘ক্লিন নোট পলিসি’ বা স্বচ্ছ নোট নীতিকে নির্দেশ বলে ভুল করছেন। ওই নীতিতে নোটে কিছু না-লিখতে বা অনেকগুলি নোট একসঙ্গে রাখার জন্য ‘স্টেপল’ না-করতে আরবিআই সকলের কাছে আর্জি জানিয়েছে। কারণ এতে নোটটির ক্ষতি হতে পারে। সোজা কথায় সেটির মেয়াদকাল কমে যেতে পারে। প্রতিটি নোট ছাপানোর একটা খরচ রয়েছে। কোনও নোট স্বাভাবিক মেয়াদকালের চেয়ে কম চললে, নোট ছাপানোর খরচ বাড়ে। তাই ওই আর্জি আরবিআই-র।
কিন্তু সেটাকে নির্দেশ ধরে নিয়ে এ রকম নোটকে ‘অচল’ তকমা দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই বলেই দাবি ব্যাঙ্ক কর্তাদের।