দিল্লির আনন্দবিহার থেকে অসমের কামাখ্যাগামী নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস বক্সারে লাইনচ্যুত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
ট্রেনে ওঠার সময় মহানন্দে দুই যমজ মেয়ের সঙ্গে নিজস্বী তুলেছিলেন মা ঊষা ভাণ্ডারী। ছোট্ট অদিতির চোখে ভাসছে সেই স্মৃতি। বিহারের বক্সারের রঘুনাথপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিছানায় বাবাকে জড়িয়ে শুয়ে অস্থির অদিতি বারবার মায়ের কাছে যেতে চাইছে।
বুধবার রাতে দিল্লির আনন্দবিহার থেকে অসমের কামাখ্যাগামী নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস বক্সারে লাইনচ্যুত হয়ে যে চার জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে অদিতির মা ঊষা এবং বোন আকৃতি রয়েছে। সে কথা অবশ্য এখনও জানে না আট বছরের অদিতি। ঊষার বয়স বছর সাঁইত্রিশ। বাড়ি অসমের তিনসুকিয়ায়। স্বামী দীপক কর্মসূত্রে দিল্লি প্রবাসী। ছুটিতে সপরিবার নেপালে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। ছিলেন এস-১ কামরায়। মৃতদের মধ্যে আর রয়েছেন রাজস্থানের নরেন্দ্র কুমার ও বিহারের আবু জায়েদ (২৮)।
সূত্রের খবর, রেলের ছ’জন আধিকারিকের সই করা প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, লাইনের ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা। ২২টি কামরা ও ইঞ্জিনের সব ক’টিই লাইনচ্যুত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ৫২ কোটি টাকার। অল্প জখম লোকো পাইলট বিপিনকুমার সিংহ জানিয়েছেন, রাত ৯টা ২৯ মিনিট নাগাদ ট্রেন বক্সার স্টেশনে পৌঁছলে অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট নেমে ইঞ্জিন পরীক্ষা করেন। সব ঠিকই ছিল। রঘুনাথপুর স্টেশন পেরোনোর পরেই দুর্ঘটনা। রাত তখন ৯টা ৫২ মিনিট।
দীপক জানান, তাঁরা তখন খাওয়া সেরে শোয়ার তোড়জোড় করছিলেন। দুর্ঘটনার প্রাথমিক অভিঘাত কাটতেই খোঁজ শুরু করেন স্ত্রী ও মেয়েদের। কানে আসে অদিতির ডাক। পরে লক্ষ করেন, জানালা ভেঙে ছিটকে বাইরে পড়ে স্ত্রী ও আর এক মেয়ে। নিথর।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও গুরুতর জখমদের আড়াই লক্ষ টাকা আর অল্প জখমদের ৫০ হাজার টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছেন।