পাঁচকুলায় চলছে সেনা টহল। ছবি: এএফপি।
নতুন করে হিংসা না ছড়ালেও এখনও থমথমে পরিস্থিতি হরিয়ানার পঞ্চকুলায়। রাস্তায় সেনা টহল চলছে। শুক্রবার ডেরা ভক্তদের তাণ্ডবের পর পঞ্চকুলা, সিরসা এবং কৈথালে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। তবে পঞ্জাবের উত্তজনাপ্রবণ কয়েকটি শহরে শনিবার চার ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছে যাতে বাসিন্দারা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারেন। হরিয়ানা পুলিশের ডিজি এ দিন জানিয়েছেন, হরিয়ানায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে সিরসাতে এখনও কার্ফু রয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, তাণ্ডব চালানোর জন্য শুক্রবার রাতেই প্রায় হাজারখানেক ডেরা সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালেই সিরসায় ডেরার সদর দফতরে পুলিশকে নিয়ে পৌঁছায় সেনা। খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেনা ও পুলিশ ডেরা-র সদর দফতরের প্রবেশদ্বারের কাছে পৌঁছতেই তাদের লক্ষ্য করে ভক্তরা পাথর ছোড়ে। পুলিশ ও সেনা ডেরার সদর দফতরকে ঘিরে ফেলেছে। সেনার তরফ থেকে মাইকিং করে ভক্তদের সদর দফতর থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, ডেরা-র দফতরের মধ্যে পুরুষ, মহিলা ও শিশু মিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ভক্ত রয়েছে। হিসারের আইজি জানিয়েছেন, যাঁরা নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়েছে, তাঁদের কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না। রাজ্যে ডেরার সমস্ত কেন্দ্রগুলোতে তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে হরিয়ানা সরকার। ইতিমধ্যেই ডেরা-র ৩৬টি কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) রাম নিবাস বলেন, “রাজ্যে ডেরা-র যে সব নাম চর্চা ঘর রয়েছে সেগুলো তল্লাশির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।”
আরও পড়ুন: ধর্ষণে দোষী ‘বাবা’, সচ্চা-ভক্ত তাণ্ডবের বলি ৩০
আরও পড়ুন: ভক্তদের কাছে তিনি ভগবানের দূত ‘ইনসান’
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে পঞ্চকুলায়।
এ দিন কুরুক্ষেত্রে অভিযান চালিয়ে ডেরা-র ৯টি কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সেখান থেকে আড়াই হাজার লাঠি এবং প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলো থেকে ভক্তদের বের করে দেওয়া হয়েছে। ফের যাতে হিংসা না ছড়াতে পারে তার জন্য প্রচুর পুলিশ টহল দিচ্ছে ডেরা-র কেন্দ্রগুলোতে।
এ দিকে, দুই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নিজের বাসভবনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এই বৈঠকে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, গোয়েন্দা প্রধান রাজীব জৈন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মেহরিষি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও হরিয়ানা বিজেপির দায়িত্বে থাকা অনিল জৈনের সঙ্গেও রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
শুক্রবারে পঞ্চকুলার বিশেষ আদালতে রাম রহিম ধর্ষণ মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ার পরই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে হরিয়ানার পঞ্চকুলা। ডেরা ভক্তদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ভাঙচুর, আগুন ও হিংসার ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩১ জনের। আহত হয়েছেন ২৫০ জনেরও বেশি।