প্রতীকী ছবি।
কোভিড হলে এক রকম, কিন্তু অন্য রোগ হলে বরং বেশি বিপদ গুয়াহাটিতে। কারণ, বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলি আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট ছাড়া রোগী ও তার পরিবারকে ঢুকতে দিচ্ছে না। আবার সরকারি আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের সময় বলা হচ্ছে রিপোর্ট ৭ দিনে মিলবে, কিন্তু না আসছে এসএমএস, না আপলোড হচ্ছে সেই রিপোর্ট। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে করোনাহীন অসুস্থ ব্যক্তিকেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না হাসপাতালে।
এ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নালিশ জানিয়েও লাভ হয়নি। এ বার বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের দেবব্রত শইকিয়া। গৌহাটি হাইকোর্টে যার শুনানি হবে ১৯ অক্টোবর।
দেবব্রতবাবুর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যেখানে ২৮ এপ্রিল সব রাজ্যে নির্দেশিকা পাঠিয়ে স্পষ্ট করে বলেছিল, করোনার অজুহাতে যেন জরুরি ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিলম্বিত বা বাধাপ্রাপ্ত না-হয়। কিন্তু অসমের বেসরকারি হাসপাতালগুলি তা মানছে না। শুধু সাধারণ অসুস্থতাই নয়, দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম ব্যক্তি, আশঙ্কাজনক অবস্থায় আসা প্রসূতি ও হৃদ্রোগীর ক্ষেত্রেও দ্রুত চিকিৎসা করা ও জীবন বাঁচানোই প্রধান কর্তব্য, সে ক্ষেত্রেও ‘করোনা-মুক্ত’ হওয়ার শংসাপত্র সঙ্গে না-থাকলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
অনেক ক্ষেত্রে সরকারি অ্যান্টিজেন পরীক্ষার রিপোর্টও মানা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে আরটি-পিসিআরের রিপোর্ট চাই। আবার রিপোর্ট পুরনো হলেও হবে না। অর্থাৎ বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে হলে অন্য রোগে অসুস্থ ব্যক্তি তো বটেই, সুস্থদেরও প্রতি সপ্তাহে এক বার গিয়ে কোভিড পরীক্ষা করানো দরকার। না-হলে হঠাৎ দুর্ঘটনার সময় সেই সার্টিফিকেট কোথায় মিলবে!
এই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে, যে পরীক্ষা সরকার বিনামূল্যে করাচ্ছে, সেই পরীক্ষা করাতেই বেসরকারি হাসপাতালগুলি ৪৫০০ থেকে ৬০০০ হাজার টাকা নিচ্ছে। এই ক্ষেত্রে পরের দিনেই চলে আসছে রিপোর্ট। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ঘোষণা করেছেন, এ বার থেকে কারও যদি পরের দিনেই সরকারি কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট প্রয়োজন হয়, তা হলে নির্দিষ্ট টাকা জমা দিলে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাওয়া যাবে। সেই খরচ অবশ্যই বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় অনেক কম।
এ দিকে স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, প্রতি দিন যে ভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে সরকারি পরিষেবার সামর্থ্যে টান পড়ছে। গুয়াহাটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। দিনে নতুন রোগী আসছে গড়ে ছ’শোরও বেশি।
অসমে মঙ্গলবারে ৩৪,৪৬২টি নমুনা পরীক্ষা হয়। ২৫৭৯ জন নতুন করে কোভিড পজ়িটিভ হয়েছেন। তার মধ্যে কামরূপ মহানগরেই আক্রান্ত ৭২৯ জন। সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৪৮ শতাংশ। রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,৩০,৮২৮ জন। সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,০১,২৩৯ জন। বুধবার সকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৭৮।
রাজ্যে ৪১৪৬ জন পুলিশকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। ৩৬৫৯ জন সুস্থ হয়েছেন এখন পর্যন্ত। মারা গিয়েছেন ১৬ জন পুলিশকর্মী।