জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলার শুনানি ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। — ফাইল চিত্র।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-কে সমীক্ষার কাজ চালানোর উপর স্থগিতাদেশের সময়সীমা আগামী ৩ অগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার ওই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রীতিনকর দিবাকরের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’-র আবেদন মেনে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার জন্য বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশের (জ্ঞানবাপী চত্বরে পুরাতাত্ত্বিক সমীক্ষা) উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। ওই সময়সীমার মধ্যে এ বিষয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছিল। বুধবার মসজিদ কমিটির তরফে হাই কোর্টকে জানানো হয়েছিল, সমীক্ষার অনুমতি দিলে প্রাচীন ওই সৌধের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট বলে, ‘‘আপনারা যদি এএসআই-এর বিশেষজ্ঞদের আশ্বাসেও আস্থা রাখতে না পারেন, তা হলে কিছুই বলার নেই।’’
মসজিদ কমিটির আইনজীবী এসএফও নকভি বৃহস্পতিবার শুনানি পর্বে বলেন, ‘‘এমন কোনও ঐতিহাসিক তথ্য নেই যার ভিত্তিতে দাবি করা যায়, জ্ঞানবাপী মসজিদ কোনও হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর নির্মাণ করা হয়েছিল।’’ যদিও হিন্দু পক্ষের আইনজীবী ওই মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। বিতর্কে উঠে আসে পুরাতত্ত্ববিদ নিল জির ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত গবেষণায় পাওয়া তথ্য এবং ফোটোগ্রাফগুলির প্রসঙ্গও।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুলাই বারাণসী জেলা আদালতের বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেস জ্ঞানবাপী চত্বরে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার’ নির্দেশ দিয়েছিলেন এএসআই-কে। তবে বিতর্কিত ওজুখানায় পাওয়া তথাকথিত ‘শিবলিঙ্গ’ এবং সন্নিহিত ‘সিল’ করা এলাকায় এখনই কোনও সমীক্ষা হবে না বলে বারাণসী জেলা আদালত জানিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, এর আগে জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটির তরফে পাঁচ হিন্দু মহিলার ২০২১ সালের পূজার্চনার আবেদন খারিজ করার জন্য বারাণসী জেলা আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল। মসজিদ কমিটির আইনজীবী অভয় নাথ বারাণসী জেলা আদালতে জানিয়েছিলেন, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন এবং ১৯৯৫ সালের সেন্ট্রাল ওয়াকফ আইন অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হতে পারে না। অন্য দিকে, হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন এবং হরিশঙ্কর জৈনের দাবি ছিল, ১৯৯১ সালের ওই আইন জ্ঞানবাপীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তিনি জানান, ১৯৪৭ সালের পরেও শৃঙ্গার গৌরীস্থলে পূজার্চনার প্রমাণ রয়েছে। বারাণসী জেলা আদালত হিন্দু পক্ষের দাবি মেনে জ্ঞানবাপীর ‘সিল’ করা এলাকার বাইরে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল।