কোনও নাম নয়....। সনিয়া গাঁধীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদমাধ্যমকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য বিরোধীদের মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলায় জোর দেওয়া হবে। ছবি: পিটিআই।
গতকাল দিল্লিতে পা দিয়েই জানিয়েছিলেন, শাড়ির খুঁটিতে কোনও ‘নাম’ নিয়ে আসেননি তিনি। আর আজ কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট নাম নয়, ঐক্যমতের ধারণাটিকেই তুলে ধরলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে সুকৌশলে এই প্রসঙ্গে বল ঠেলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা শাসকজোটের কোর্টে।
আজ সনিয়ার সঙ্গে পৌনে ঘণ্টা বৈঠকের পর বেরিয়ে দশ জনপথের সামনে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, ‘‘কোনও বিশেষ নাম নিয়ে আমরা আলোচনা করিনি। প্রধান বিরোধী দলনেত্রী হিসাবে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেই প্রথমে কথা বললাম আজ। রাহুল গাঁধীও সেখানে ছিলেন।’’ গতকালই মমতা যখন দিল্লিমুখী বিমানে তখন নীতীশ কুমার পটনা থেকে জানিয়েছিলেন, প্রণব মুখোপাধ্যায় পুনর্নির্বাচিত হলে তিনি খুশি হবেন। আজ এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগী হওয়া উচিত একটি নামে সর্বসম্মতি তৈরি করার। আমরা সর্বসম্মতির পক্ষে।’’ রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ইঙ্গিত স্পষ্ট। আগে থাকতেই ঝুলি থেকে নাম বের না করে মমতা অপেক্ষা করতে চাইছেন, মোদী কোন নাম প্রস্তাব করেন সেটি দেখে নেওয়ার। সেটি যদি পছন্দের হয় তা হলে সর্বসম্মতির রাস্তায় হাঁটার জন্য সক্রিয় হবেন তিনি।
সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করতে ১০ জনপথে ঢুকছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। ছবি: পিটিআই।
সূত্রের খবর, গত বার একটি নামের কথা আগে থাকতে বলে যে তিক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এ বার আর সেই পথে হাঁটতে চান না নেত্রী। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুনর্নির্বাচন। কিন্তু প্রণববাবু ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে দ্বিতীয় বার রাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোটে লড়বেন না তিনি। ফলে একমাত্র সর্বসম্মতির ভিত্তিতে যদি তাঁকে বাছা হয় তবেই প্রণববাবুর দ্বিতীয় বার রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার ভোটের অঙ্ক এখন এমনই যে, বিজেপি তথা এনডিএ-র শরিকদের সমর্থন ছাড়া কোনও বিরোধী প্রার্থীর জিতে আসা কার্যত অসম্ভব। ফলে, মমতা দেখতে চাইছেন মোদী শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে কোন নাম বাছেন। যদি সেই নাম প্রণবের হয় তা হলে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীরা সহজেই তা সমর্থন করবেন। কিন্তু বিজেপি-র প্রার্থী যদি মমতা তথা অন্য বিরোধীদের অপছন্দের হয় তখন বিরোধীদের মধ্যে ঐকমত্যের চেষ্টা শুরু হবে।
আরও পড়ুন: লালু-চিদম্বরম একই দিনে বিদ্ধ: বিরোধীরা বলছেন ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’
দ্বিতীয় বিকল্প, অর্থাৎ বিরোধীদের মধ্যেও সর্বসম্মতি তৈরির বিষয়েও আজ সরব হয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘বিরোধীরা সবাই মিলে বসে নিজেদের মধ্যে সর্বসম্মতির চেষ্টা করা হচ্ছে। সনিয়া সবার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছেন। আমিও খুব শীঘ্রই তাঁর সঙ্গে ফের বসব। এই আলোচনার প্রক্রিয়াটি শেষ হলে একটি ঐকমত্য তৈরি সম্ভব হবে। আমাদের বিরাট দেশ। বহু জাতি ধর্ম বর্ণ। সর্বসম্মতির জন্য সব কিছুই বিবেচনা করা প্রয়োজন।’’