পার্টি কংগ্রেসের ফাঁকে কারাট দম্পতি।
সিপিএম বলল, বদলাইনি। সিপিএমই বলল, বদলেছি!
বেনজির কাণ্ড ঘটল পার্টি কংগ্রেসে। পলিটব্যুরোর নেত্রী বৃন্দা কারাট মিডিয়া পয়েন্টে এসে দাবি করলেন, দলের লাইনে কোনও পরিবর্তনই হয়নি! এমনকী, সীতারাম ইয়েচুরির ‘সংখ্যালঘু মত’ গৃহীত বা বাতিলও হয়নি! পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে সে খবর পৌঁছতেই পরে পলিটব্যুরোর আর এক সদস্য মহম্মদ সেলিম এসে জানিয়ে গেলেন, দলের রাজনৈতিক প্রস্তাবে বড়় রকমের পরিবর্তন হয়েছে!
কারাট দম্পতির সঙ্গে ইয়েচুরির মত মিলবে না, সিপিএমে তা একেবারেই নতুন কথা নয়। কিন্তু পার্টি কংগ্রেসে আগের রাতে পাশ হওয়া রাজনৈতিক প্রস্তাব পর দিন দুপুরে দলের এক শীর্ষ নেত্রী বেমালুম অস্বীকার করবেন এবং পরে অন্য এক নেতাকে পাঠিয়ে সেই দাবি খারিজ করা হবে— এমন ঘটনা অভূতপূর্ব! দলের বড়় অংশের মতে, দীর্ঘ দিনের আধিপত্যে ভাঙন ধরে আপসে যেতে বাধ্য হওয়ায় কারাট শিবিরের দশা হয়েছে, ভাঙব তবু মচকাব না! সোশ্যাল মিডিয়ায় গত কাল রাত থেকেই দলের একাংশের প্রচার এবং আজ বৃন্দার বক্তব্যে সেই মনোভাবই স্পষ্ট।
তেলুগু আদিবাসীর বেশে ইয়েচুরি। শনিবার হায়দরাবাদে।
প্রশ্ন উঠতেই বৃন্দা বলেছেন, ‘‘সংখ্যালঘু (ইয়েচুরির) মত গৃহীত হয়নি, খারিজও হয়নি। পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে কিছু অনুচ্ছেদ নতুন করে লেখা হয়েছে।’’ পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক রিপোর্টে উল্লেখ আছে, ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে বাংলার সিপিএমের কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা দলের লাইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। বাংলার জীবেশ সরকারেরা ভিতরে ওই মতের পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন। আর বাইরে বৃন্দা বলেছেন, ‘‘বাংলা ভুল করেছিল। আবার ওই কাজ করতে গেলেও অনুমোদিত হবে না!’’ পক্ষান্তরে সেলিম স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কিছু অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়া হয়েছে, কিছু অংশ যুক্ত করা হয়েছে। সংশোধনীতে সেটা পরিষ্কার করে লেখা আছে। এটাই তো পরিবর্তন!’’ নির্বাচনী কৌশল ভোটের সময়েই ঠিক হবে বলে দরজা খোলাও রেখেছেন সেলিম।
আগে হলে বৃন্দা খোলা মাঠ পেয়ে যেতেন। এ বার পাল্টা ব্যাট হাতে পাঠানো হল সেলিমকে। ইঙ্গিত স্পষ্ট— অধিনায়ক ইয়েচুরি দলের কর্তৃত্ব হাতে নিচ্ছেন!
—নিজস্ব চিত্র।