National News

মিনি স্কার্ট, খোলামেলা টপ পরে ঢোকা যাবে না লখনউয়ের ইমামবড়ায়, ‘ফতোয়া’ জারি জেলাশাসকের

জেলা প্রশাসনের ব্যাখ্যা, প্রায় দুই শতাব্দী প্রাচীন এই মসজিদের পবিত্রতার কথা মাথায় রেখেই এমন ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফোটোগ্রাফি এবং ভিডিয়োগ্রাফি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ১২:১৯
Share:

পোশাক বিধি জারি হয়েছে এই বড়া ইমামবড়ায়।

লখনউ বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে? তাহলে পোশাক সম্পর্কে সচেতন হোন। কারণ সেখানকার ইমামবড়া মসজিদে খোলামেলা পোশাক পরে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনই ‘ফতোয়া’ জারি করলেন লখনউয়ের জেলাশাসক। বিজ্ঞপ্তিতে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, মিনি স্কার্ট বা খোলামেলা টপ পরে ‘বড়া ইমামবড়া’ বা ‘ছোটা ইমামবড়া’ মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না। কট্টরপন্থী কোনও ধর্মীয় সংগঠন নয়, খোদ জেলা প্রশাসনের এমন ফতোয়ায় দানা বেঁধেছে বিতর্ক।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের অন্যতম দর্শনীয় স্থান বড়া ইমামবড়া ও ছোটা ইমামবড়া। কিন্তু এই দুই দর্শনীয় স্থানেই এখন থেকে আর খোলামেলা পোশাক পরে ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। সম্প্রতি শিয়া সম্প্রদায়ের মৌলবিদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয় জেলা প্রশাসনের। ওই বৈঠকের পরেই জেলাশাসক কুশলরাজ শর্মা বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেন, ‘ঐতিহাসিক এই ভবনে শর্ট স্কার্ট বা শরীর দেখা যায়, এমন কোনও পোশাক পরে ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। শরীর ঢাকা থাকবে, এমন পোশাক পরেই ভিতরে ঢুকতে হবে দর্শনার্থীদের।’

জেলা প্রশাসনের ব্যাখ্যা, প্রায় দুই শতাব্দী প্রাচীন এই মসজিদের পবিত্রতার কথা মাথায় রেখেই এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফোটোগ্রাফি এবং ভিডিয়োগ্রাফি। একই সঙ্গে জেলাশাসকের সংযোজন, নিরাপত্তা রক্ষী এবং গাইডদেরও এ বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীরা ঢোকার সময় তাঁদের পোশাকের উপর কড়া নজরদারির কথা বলা হয়েছে। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগে, এমন দৃষ্টিকটূ পোশাক পরে কেউ যাতে ভিতরে ঢুকতে না পারেন, তা কঠোর ভাবে মেনে চলার কথাও বলা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষীদের।

Advertisement

একই পোশাক বিধি চালু করার ফতোয়া জারি হয়েছে এই ছোট ইমামবড়াতেও।

আরও পডু়ন: আধিকারিককে ব্যাট দিয়ে পেটানো আকাশ বিজয়বর্গীয়র জামিন, শূন্যে গুলি ছুড়ে উল্লাস সমর্থকদের

আরও পড়ুন: ‘সংসদ চলছে বলে নখ-দাঁতগুলো দেখতে পাচ্ছেন না’, মমতাকে হুঁশিয়ারি মুকুলের

ইতিমধ্যেই দুই ইমামবড়া মসজিদকে সংরক্ষিত স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) বা ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ। জেলা প্রাশাসনের সঙ্গে ওই বৈঠকে শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি এএসআই আধিকারিকরাও ছিলেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, তাঁদের তরফেও এর কোনও বিরোধিতা করা হয়নি।

কিন্তু কেন এই ফতোয়া? স্থানীয় সূত্রে খবর, লখনউয়ের শিয়া মৌলবি, ঐতিহাসিক ও সুশিল সমাজের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং এ বিষয়ে একটি চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে একটি পোশাক বিধি চালুর দাবি করা হয়। তাঁদের বক্তব্য ছিল, অমৃতসরে স্বর্ণমন্দিরে ঢোকার সময় যেমন মাথা ঢেকে যেতে হয়, তেমনই এই ইমামবড়া মসজিদে প্রবেশের ক্ষেত্রেও সেই রকম পোশাক বিধি কার্যকরী করা হোক। সেই চিঠির ভিত্তিতেই এই নির্দেশ বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। যদিও বিদ্বজ্জনদের মুক্তমনা একটি অংশের মতে, এ ভাবে পোশাক নির্দিষ্ট করে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। এতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমার আশঙ্কাও করেছেন পর্যটন মহলের একাংশ।

১৭৮৪ সালে তৎকালীন অওধের নবাব আসাদ-উদ-দৌলা লখনউয়ের বড়া ইমামবড়া বা আসফি মসজিদ ভবন তৈরি করেন। সুবিশাল এই ঐতিহাসিক ভবনে রয়েছে আসফি মসজিদ, ভুল ভুলাইয়া, বাউলি অর্থাৎ স্রোতস্বিনী কুয়োর মতো দর্শনীয় স্থান। অন্য দিকে লখনউয়ের ছোটা ইমামবড়া বা ‘ইমামবড়া হুসেনাবাদ মুবারক’ তৈরি হয়েছিল ১৮৩৮ সালে তৎকালীন অওধের নবাব মুহম্মদ আলি শাহর শাসনকালে। সমাধিস্থল হিসেবে তৈরি হয়েছিল এই ছোট ইমামবড়া। রয়েছে মুহম্মদ আলি শাহ এবং তাঁর মায়ের সমাধি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement