দ্বাদশ শতকের এই প্রাচীন মন্দিরের প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিষ্ট্রেশেন এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন। ফাইল চিত্র।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ইঁদুরের দৌরাত্ম্য থামাতে একটি অত্যাধুনিক যন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন এক ভক্ত। কিন্তু সেই যন্ত্র নিয়ে তীব্র আপত্তি তুললেন মন্দিরের পাণ্ডা এবং সেবায়েতরা। তাঁদের যুক্তি, ওই যন্ত্র ভগবানের নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে!
দ্বাদশ শতকের এই প্রাচীন মন্দিরের প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিষ্ট্রেশেন (এসজিটিএ)-ই এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই যন্ত্রটির নাম আর্থ ইনোভেশন। ইতিমধ্যেই এসজিটিএ-র অফিসে ওই যন্ত্র নিয়মিত ইঁদুর তাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। তাতে সুফলও মিলেছে। এর পরেই যন্ত্রটিকে মন্দির চত্বরকে ইঁদুর মুক্ত রাখার কাজেও ব্যবহার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মন্দিরের সেবায়েত এবং বিগ্রহের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পাণ্ডারা তা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের যুক্তি, ওই যন্ত্রে ইঁদুর তাড়ানোর জন্য একটি অদ্ভুত কম্পন এবং সেই কম্পনের আওয়াজ হয়। ওই শব্দ মন্দিরের শান্তি নষ্ট করতে পারে। এমনকি, শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের আরাধ্য ভগবানের বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
এসজিটিএ-র নীতি প্রশাসক জীতেন্দ্র সাহু বলেছেন, ‘‘মন্দিরের বেশ কিছু নিয়ম আছে। তার মধ্যে একটি হল, ভগবান যখন নিদ্রা যান, তখন মন্দিরের জয়বিজয় দ্বার থেকে শুরু করে মন্দিরের গর্ভগৃহ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় দুর্ভেদ্য অন্ধকার এবং পিন পড়া নৈশব্দ্য বজায় রাখতে হবে। কিন্তু এই যন্ত্রটিতে ইঁদুর তাড়ানোর জন্য একটি অদ্ভুত শব্দ তৈরি করে। যা ওই নৈশব্দ্য প্রতি মুহূর্তে ভেঙে চুরমার করে দেবে। তা নিয়েই সেবায়েতদের আপত্তি।’’
এসজিটিএ-র তরফে সাহু বলেছেন, ‘‘মন্দির চত্বরে ওই যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বৈঠকে বসেছিলাম আমরা সেবায়েতদের সঙ্গে। এক ভক্তের দেওয়া ওই যন্ত্রের উপযোগিতা মেনে নিয়েও শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, মন্দির চত্বরে ওই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হবে না। এ বিষয়ে মন্দির প্রশাসন সংক্রান্ত সমস্ত পক্ষই একমত হয়েছে।’’
আপাতত পুরীর মন্দির চত্বরে ইঁদুরের দৌরাত্ম্য কমাতে যে পুরনো পদ্ধতির প্রচলন ছিল সেই পদ্ধতিই চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন সাহু। মন্দিরে ইঁদুর ধরার জন্য ইঁদুর মারার কলের সাহায্য নেওয়া হত এতদিন। মন্দিরের সেবায়েতদের আপত্তি না থাকায় সেই পদ্ধতিই বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে এসজিটিএ।