একটি বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার কাছ থেকে জমি-বাড়ি কেনার মামলায় ওড়িশার প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) অশোক মহান্তিকে কয়েক দিন আগে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কিন্তু তাঁর জামিনের আবেদনের বিরুদ্ধে ওড়িশা হাইকোর্টে সিবিআইয়ের প্যানেলে থাকা দুই আইনজীবীর কেউই সওয়াল করেননি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মহান্তির জামিনের আবেদন গ্রহণ করেনি হাইকোর্ট।
ওড়িশা হাইকোর্টের বিচারপতি এস কে মিশ্র আজ, শুক্রবার প্রথম অর্ধে ভুবনেশ্বরের দায়রা আদালতে মহান্তিকে জামিনের আবেদন করতে বলেছেন। সেই আবেদন যদি খারিজ হয়ে যায়, সে-ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অর্ধেই হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করতে বলা হয়েছে। এই মামলার নথিপত্র দায়রা আদালতে জমা দেওয়ার জন্য সিবিআই-কে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
সোমবার কটকে গ্রেফতারের পরে মহান্তিকে দু’দিন সিবিআইয়ের হেফাজতে রাখা হয়েছিল। বুধবার নিম্ন আদালতে তোলা হলে তিনি জামিনের জন্য আবেদন করেন। সন্ধ্যা নাগাদ সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। তাঁকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখতে বলে নিম্ন আদালত।
বৃহস্পতিবার মহান্তি সরাসরি ওড়িশা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান। দায়রা আদালতে না-গিয়ে মহান্তি হাইকোর্টে গেলেন কেন?
হাইকোর্ট সূত্রের খবর, মহান্তির গ্রেফতারির প্রতিবাদে আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করছিলেন। তাই দায়রা আদালতের বদলে মহান্তি সরাসরি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান। মহান্তিকে গ্রেফতারের জন্য এ দিন ওড়িশা হাইকোর্টের কৌঁসুলিরাও কর্মবিরতি পালন করছিলেন। তা সত্ত্বেও প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেলের হয়ে জামিনের আবেদন পেশ করেন আইনজীবীরা।
সিবিআইয়ের মামলা লড়ার জন্য হাইকোর্টে পানেল-ভুক্ত আইনজীবীরা থাকেন। হাইকোর্টের মামলায় তাঁরাই সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করেন। ওড়িশা হাইকোর্টে সিবিআইয়ের প্যানেলে দু’জন আইনজীবী আছেন। দু’জনেই জানিয়ে দেন, প্রাক্তন এজি-র বিরুদ্ধে তাঁরা দাঁড়াবেন না। তাঁদের এক জন মহান্তির অধীনেই অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে কাজ করেছেন। শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এক দিন সময় চাওয়া হয়।
শুক্রবার দায়রা আদালতে মহান্তির জামিনের আবেদন যদি খারিজ হয়ে যায়, তার পরে তো মামলাটি আবার হাইকোর্টে উঠবে। তখন কী হবে?
সিবিআই সূত্র জানাচ্ছে, তাদের দিল্লি প্যানেলের আইনজীবী কে রাঘবচারিলুকে কলকাতা থেকে ওড়িশায় পাঠানো হচ্ছে। সিবিআইয়ের একটি মামলার সূত্রেই তিনি বৃহস্পতিবার কলকাতায় ছিলেন।
গ্রেফতারের ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরেই ৭০ বছরের মহান্তি ১২ সেপ্টেম্বর এজি-র পদে ইস্তফা দেন বলে জানাচ্ছে সিবিআই। তাদের অভিযোগ, ‘অর্থ তত্ত্ব’ নামে একটি লগ্নি সংস্থার প্রধানের কাছ থেকে অশোকবাবু কিছু সম্পত্তি কেনেন। কত টাকায়, কী ভাবে তা কেনা হয়েছে, তার তদন্ত চলছে। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই ওড়িশার ১৭, মুম্বইয়ের তিন এবং কলকাতা ও বেঙ্গালুরুর একটি করে জায়গায় তারা হানা দিয়েছে বলে জানায় সিবিআই।