আজ মহারাষ্ট্র নিয়ে শুনানি সুপ্রিম কোর্টে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশ জুড়ে হচ্ছেটা কী? ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় এ বার এমনই প্রতিক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের।
বিশিষ্ট নাগরিকদের ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে তেতে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। তার মধ্যেই ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ তুলেছিলেন সে রাজ্যের আইপিএস অফিসার মুকেশ গুপ্ত।
সেই মামলার শুনানিতেই সোমবার এমন মন্তব্য করে বিচারপতি অরুণ মিশ্র নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। বলা হয়, ‘‘এ ভাবে আড়ি পাতা হচ্ছে কেন? দেশের মানুষের গোপনতা বলে তো আর কিছু রইল না। প্রতিদিন কিছু না কিছু ঘটছেই। এ দেশে হচ্ছেটা কী?’’
আরও পড়ুন: জোর করে বিজোড় নম্বরের গাড়ি নামিয়ে জরিমানা দিলেন বিজেপি সাংসদ, পেলেন ফুলের তোড়া
নিজের অভিযোগে মুকেশ গুপ্ত জানিয়েছেন, রাজ্যের অর্থনৈতিক অপরাধ (ইওডাব্লিউ) এবং দুর্নীতি দমন শাখার (এসিবি) ডিরেক্টর জেনারেল হিসাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন নাগরিক আপূর্তি দুর্নীতি এবং অলোক অগরওয়াল কাণ্ডের পর্দাফাঁস করেন তিনি। অভিযুক্তদের ফোনে আড়ি পেতে বহু তথ্য হাতে পান। তার ভিত্তিতে চার্জশিটও দাখিল করেন।
কিন্তু ডিসেম্বরে ক্ষমতা বদলের পর তাঁকে পুলিশ সদর দফতরে বদলি করা হয়। তার পর মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধেই। বলা হয়, তদন্তের নামে বেআইনি ভাবে ফোনে আড়ি পেতেছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, তাঁর ফোনে তো বটেই, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের ফোনেও আড়ি পাতা হয় বলে অভিযোগ করেছেন মুকেশ গুপ্ত।
এই ঘটনায় ছত্তীসগঢ় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে শীর্ষ আদালত। কার নির্দেশে মুকেশ গুপ্তর ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে ছত্তীসগঢ় সরকারের কাছে। আদালত আগামী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মুকেশ গুপ্তর বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআরেও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলা থেকে ভূপেশ বাঘেলের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দু’পক্ষকেই।
আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীরে বন্দি নেতাদের হোটেল খরচ ২ কোটি ৬৫ লক্ষ! এ বার অন্যত্র সরানোর ভাবনা
ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। এ বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ১২০ জন বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং সমাজকর্মীর ফোনে ইজরায়েলি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা এনএসও আড়ি পেতেছিল বলে জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা ফেসবুক।
গোটা ঘটনায় মোদীর সরকারের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের ফোনেও আড়ি পাতা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী এবং এনসিপি-র প্রফুল্ল পটেল। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।