ফাইল চিত্র
গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণীকে গ্রেফতারের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনেও উত্তপ্ত কোকরাঝাড়। আজ অসমের বিভিন্ন দলের নেতারা পুলিশ হেফাজতে থাকা দলিত নেতা জিগ্নেশের সঙ্গে দেখা করতে কোকরাঝাড়ে হাজির হন। বিস্তর প্রতিবাদের পরে কংগ্রেস, সিপিএম ও রাইজর দলের বিধায়ককে দেখা করতে দেয় পুলিশ। জিগ্নেশ জানান, তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতির মোকাবিলা করতে মানসিক ভাবে প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা একটি টুইটের ভিত্তিতে ১৯ এপ্রিল বড়ো স্বশাসিত পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য অরূপকুমার দে জিগ্নেশের বিরুদ্ধে এফআইআর করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোকরাঝাড় থেকে গিয়ে পুলিশের একটি দল পালনপুরে সার্কিট হাউস থেকে জিগ্নেশকে গ্রেফতার করে। যে ভাবে পুলিশ এত দূর থেকে গভীর রাতে অন্য রাজ্যের বিধায়ককে গ্রেফতার করে এনেছে, তা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অঙ্গ বলে দাবি বিরোধী দলগুলি।
আজ জিগ্নেশের সঙ্গে দেখা করতে যান সিপিএম বিধায়ক মনোরঞ্জন তালুকদার, রাইজর দলের বিধায়ক অখিল গগৈ, কংগ্রেসের বিধায়ক জাকির হুসেন শিকদার, প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র অপূর্ব ভট্টাচার্য-সহ অনেকে। কোকরাঝাড় সদর থানার পুলিশ প্রথমে কাউকেই জিগ্নেশের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। তখন থানার সামনেই রাস্তায় ধর্নায় বসে পড়েন সিপিএম বিধায়ক মনোরঞ্জন, সিপিএম নেতা সন্তোষ গুহ ও অজিত দত্ত। মনোরঞ্জন জানান, দেখা করা তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁকে দেখা করার অনুমতি দেয়। তিনি বিজেপি সরকারের স্বৈরাচারী আচরণ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জিগ্নেশকে গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে তাঁর মুক্তি দাবি করেন।
অখিল গগৈকেও প্রথমে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘জিগ্নেশকে গ্রেফতার করে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব বাড়াতে চাইছেন হিমন্ত। গুজরাতে ভোটের আগে খামোকা জিগ্নেশকে ধরে এনে তাঁর সময় নষ্ট করা ও নরেন্দ্র মোদী ও আরএসএসের খাতায় নম্বর বাড়ানোই হিমন্তের উদ্দেশ্য। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত অবিলম্বে জিগ্নেশ ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া ও তাঁকে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়া।’’ জিগ্নেশের সঙ্গে দেখা করার পরে তিনি বলেন, ‘‘জিগ্নেশ মানসিক ভাবে শক্তিশালী আছেন। তাঁকে লকআপে না রেখে অন্য একটি ঘরে রাখা উচিত।’’
কংগ্রেসের জাকির হুসেন, অপূর্বদের দাবি, বিজেপির খারাপ দিনের সূত্রপাত হয়ে গিয়েছে। একটা সাধারণ টুইটের জন্য যদি মধ্য রাতে ভিন্ রাজ্যের বিধায়ককে এ ভাবে গ্রেফতার হতে হয় তবে অসমের বহু ব্যক্তি, বিধায়ককে গ্রেফতার করা উচিত। কংগ্রেস প্রায় দু’ঘণ্টা থানার সামনে স্লোগান দেয়। পরে এক ঘণ্টা মৌন প্রতিবাদের পরে পুলিশ জাকিরদের দেখা করার অনুমতি দেয়। অপূর্ব বলেন, ‘‘জিগ্নেশ কংগ্রেসের সমর্থন ও সাহায্যে খুশি।’’
অসমের সাহিত্যিক হীরেন গোঁহাই বলেন, ‘‘জিগ্নেশের ওই কথায় অসম বা দেশের কোথাও কোনও গোষ্ঠী সংঘর্ষের সম্ভাবনা ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর কাজেও কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়ত না। এই ঘটনা দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার।’’