ফাইল চিত্র।
কোভিডের চিকিৎসা আর বিনামূল্যে মিলবে না অসমে। দারিদ্র্যসীমার নীচে থাকা করোনা রোগীদের ইঞ্জেকশন বিনামূল্যে দেওয়া হলেও এপিএলদের ক্ষেত্রে নেওয়া হবে ১৬৫২ টাকা। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা শনিবার ঘোষণা করলেন এ কথা। বাজারে রেমডেসিভিয়ারের মূল্য চার হাজার। বিমানবন্দরেও করোনা পরীক্ষার জন্য বাধ্যতামূলক ভাবে সব যাত্রীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। মানা হচ্ছে না ভিন্ রাজ্য থেকে করিয়ে আনা আরটি-পিসিআর রিপোর্ট।
হিমন্ত সাংবাদিক বৈঠকে জানান, প্রথম পাঁচ দিনের মধ্যেই রেমডেসিভিয়ার দিতে বলেছে আইসিএমআর। তাই টান পড়েছিল ভাঁড়ারে। বর্তমানে রাজ্যের হাতে ১২,৮৬১টি ডোজ় রয়েছে। মে মাসে আরও ১ লক্ষ ইঞ্জেকশন পাওয়ার জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
হিমন্ত জানান, অসমে ১০ থেকে ১৬ এপ্রিল গড়ে দৈনিক নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮৪। এখন রাজ্যে মোট ৪০৬৯ জন করোনা রোগীর মধ্যে ৮১১ জন হাসপাতালে ভর্তি। তবে অসমে লকডাউনের কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই। রাজ্যের হাতে এখন ৬.৬ লক্ষ ডোজ় টিকা রয়েছে। কলেজ-স্কুলে ৪৫-এর উপরে থাকা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে। দফতরগুলি আগ্রহ প্রকাশ করলে সেখানে টিকা-শিবির বসানো হবে।
যে সব জেলায় সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক, সেখানে প্রাথমিক স্কুল বন্ধ রাখা হবে। আপাতত কামরূপ মহানগর, কামরূপ, ডিব্রুগড়, যোরহাট, নগাঁও, শোণিতপুর, তিনসুকিয়া ও কাছাড়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ হচ্ছে। হিমন্ত আরও বলেন, “ম্যাট্রিক পরীক্ষা ১১ মে। আসন্ন দশ দিন বিশেষজ্ঞ, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন জমা দেবে মধ্যশিক্ষা বোর্ড। নতুন সরকার আসার পরে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ম্যাট্রিক পরীক্ষা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অনেক বিহু কমিটি নিয়ম মানছে না। তাই বিহু কমিটিগুলির সঙ্গে আজ কামরূপ মহানগর জেলা প্রশাসন বৈঠকে বসে। বলা হয়েছে, উৎসব স্থলে পুলিশের নজরদারি চলবে। নিয়ম ভাঙা হলেই অন্তত হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। মন্ত্রী বলেন, “গত তিন দিন বিহুর জমায়েত হওয়া এলাকায় পরীক্ষা বাড়ানো হয়েছে। তবে, রোগ বেশি ছড়ানোর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু যে সব স্থানে করোনা বাড়ছে সেখানে বিহুর অনুষ্ঠান আর না-করাই ভাল।”
প্রশ্ন ওঠে, করোনার মধ্যে কেন নির্বাচনী জনসভা করা হল রাজ্য জুড়ে? হিমন্তর জবাব, যে সব স্থানে বড় জনসভা হয়েছে, সেখানে মোটেই করোনার বাড়াবাড়ি ছিল না। জনসভার সঙ্গে কোভিড বাড়ার সম্পর্ক এখনও প্রমাণিত নয়। অসমে ৯০ শতাংশ এলাকায় কোভিড নেই। অধিকাংশ কোভিড বাইরে থেকে আসা।
মণিপুরে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করানো করোনা নেগেটিভ শংসাপত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জারি হয়েছে নৈশ কার্ফু। মেঘালয়েও ভিন্ রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানো ও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিলংয়ে রবিবার সব দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। বদ্ধ এলাকায় হওয়া কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি হাজির থাকতে পারবেন না।