আশা দেবী।
শুক্রবার সকালে হায়দরাবাদ ‘এনকাউন্টারের’ খবর শোনার পরই নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেছিলেন, ‘‘অন্তত এক জন মেয়ে সুবিচার পেল। পুলিশকে ধন্যবাদ। সাত বছর ধরে চিৎকার করে চলেছি, আইন ভেঙে হলেও অপরাধীদের শাস্তি দিন। তার পর দেখুন, সমাজে ভালর জন্য বদল ঘটবে।’’ বাবা বদ্রিনাথ সিংহ বলেছিলেন, ‘‘আমরা যেমন সাত বছর ধরে ভুগছি, অন্তত ওই পরিবারকে সেই কষ্টটা পেতে হল না। সকালে খবর শুনে খুবই খুশি হয়েছি। দুষ্কৃতীরা নিশ্চয় কিছুটা ভয় পাবে।’’ তার কয়েক ঘণ্টা পরেই জানা গেল, দিল্লি গণধর্ষণ-কাণ্ডের এক অভিযুক্তের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি রাম কোবিন্দের কাছে সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ২০১২ সালে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ওই ঘটনায় চার অভিযুক্তের মধ্যে এক জনই সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানিয়েছিল।
দিল্লি গণধর্ষণ-কাণ্ডের অপরাধীদের মধ্যে রাম সিংহ জেলে আত্মহত্যা করে। এক নাবালক অপরাধী জুভেনাইল হোমে থাকার পরে বর্তমানে মুক্ত। ফাঁসির সাজা হয়েছে বাকি চার জনের— অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত এবং মুকেশ সিংহ। বিনয় রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদন খারিজ করার জন্য সুপারিশ জানিয়েছিলেন দিল্লির গভর্নর অনিল বৈজল। তার দু’দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও একই সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রপতির কাছে। তা জানার পর শুক্রবার নির্যাতিতার বাবা বদ্রিনাথ সিংহ বলেন, ‘‘সময় লাগছে ঠিকই, কিন্তু বিশ্বাস করি যে আমরা ন্যায়বিচার খুব শীঘ্রই পাব।’’
হায়দরাবাদের গণধর্ষণ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের ‘এনকাউন্টারে’ মৃত্যুর খবর ঘিরে দেশ দু’ভাগ। নির্ভয়ার পরিবারের পূর্ণ সমর্থন পুলিশকেই। গত সাত বছর ধরে কোর্টকাছারিতেই সময় যাচ্ছে তাদের।
আরও পড়ুন: পুলিশের গুলিতেই ঝাঁঝরা চার অভিযুক্ত
আশা বলছেন, ‘‘হায়দরাবাদ পুলিশের এই কাজ দেখে সরকার, আদালত আর দিল্লি পুলিশের শিক্ষা নেওয়া উচিত। সুবিচারের আশায় এখনও আদালতে ঘুরে চলেছি। ১৩ ডিসেম্বর আরও একটা তারিখ পেয়েছি, ওই দিন আমাকে ফের কোর্টে যেতে হবে। বিচারব্যবস্থা তথা সরকারের কাছে আবেদন করছি, যাতে নির্ভয়ার দোষীদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। আর হায়দরাবাদের ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে যেন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।’’