জেট এয়ারওয়েজ়ের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল। ফাইল চিত্র।
সমস্ত আশা হারিয়েছেন তিনি। এর চেয়ে জেলে মৃত্যু হওয়াই শ্রেয়। আদালতে ‘করজোড়ে’ বিচারককে এমনই জানালেন জেট এয়ারওয়েজ়ের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল। আর্থিক তছরুপের মামলা সত্তরোর্ধ্ব নরেশকে শনিবার হাজির করানো হয়েছিল মুম্বইয়ের একটি বিশেষ আদালতে। সেখানেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আদালতে নরেশ জানান, বর্তমানে তাঁর যা অবস্থা, এর থেকে জেলে মরে যাওয়াই ভাল।
আদালতে জেট এয়ারওয়েজ়ের প্রতিষ্ঠাতা আরও জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী অনিতার শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। ক্যানসারের ‘অ্যাডভান্সড স্টেজ’। স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে তিনি খুব উদ্বিগ্ন। তাই সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে তাঁকে যেন জামিন দেওয়া হয় বলে বিচারক এমজি দেশপাণ্ডের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। শনিবার তাঁকে যখন আদালতে হাজির করানো হয়, শুনানি শুরু হতেই নরেশ বিচারকের কাছে ব্যক্তিগত কিছু কথা বলার জন্য অনুমতি চান। বিচারক তাতে সম্মতিও দেন।
আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, যে কয়েক মিনিট ব্যক্তিগত সময় চেয়েছিলেন নরেশ, সেই সময়ে তিনি নিজের পরিস্থিতি এবং স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। ওই রেকর্ড অনুযায়ী, করজোড়ে বিচারকের কাছে আর্জি জানান জেট এয়ারওয়েজ় প্রতিষ্ঠাতা। তিনি যে সময় এই কথাগুলি বলছিলেন, সেই সময় তাঁর সমস্ত শরীর থরথর করে কাঁপছিল। নরেশ আদালতে জানান, তাঁর স্ত্রীর অবস্থা সঙ্কটজনক। কন্যাও অসুস্থ। জেলের কর্মীরা তাঁকে ঠিক মতো সহযোগিতা করছেন না বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, নরেশেরে প্রস্রাবের সমস্যা। মাঝেমধ্যে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়ে। হাঁটুর সমস্যার জন্য ঠিক মতো দাঁড়াতে পারেন না। আদালতে নরেশ জানান, তাঁর স্বাস্থ্যও সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে জেজে হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে না। তাই এই অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে জেলে ‘মরার’ অনুমতি দিক আদালত। প্রসঙ্গত, ৫২৮ কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হন নরেশ। গত বছরের পয়লা সেপ্টেম্বর তাঁকে ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকেই তিনি আর্থার রোড জেলে বন্দি।