ছবি: পিটিআই।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে প্রকাশ্যে এবং আপাতত কিছুটা সুর বদলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরেই কথা বললেন অমিত শাহ।
তবে দেশে ডিটেনশন কেন্দ্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কার্যত খণ্ডনই করলেন তিনি।
এনআরসি নিয়ে মিথ্যা প্রচার হচ্ছে দাবি করে রবিবার রামলীলা ময়দানে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘২০১৪ সালে আমার সরকার আসার পরে কোথাও এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়নি।’’ অথচ সংসদের ভিতরে-বাইরে অমিত শাহ একাধিক বার বলেছেন, ‘‘গোটা দেশে এনআরসি চালু হবে। প্রথমে নাগরিকত্ব বিল, পরে এনআরসি।’’ মোদীর রবিবারের বক্তব্যের পরে স্বাভাবিক ভাবেই অমিতের সেই সব মন্তব্য তুলে ধরে সমালোচনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, কে সত্যি বলছেন? এই পরিস্থিতিতে দু’দিন চুপ থাকার পরে মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বললেন, ‘‘দেশজুড়ে এনআরসি নিয়ে বিতর্কের কোনও দরকার নেই, কারণ এখনই এটা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন যে, এটা নিয়ে মন্ত্রিসভায় বা সংসদে এখনও কথা হয়নি।’’ সেই সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘‘আর যখন হবে, তখন কি আর লুকিয়ে হবে?’’
ডিটেনশন কেন্দ্র নিয়ে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য কার্যত খণ্ডন করেছেন তাঁর সেনাপতি অমিত। রামলীলায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘ভারতে কোনও ডিটেনশন কেন্দ্রই নেই।’’ খোদ প্রধানমন্ত্রীর ওই দাবির পরেই তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিজেপি শাসিত অসমে এনআরসি-ছুটদের কথা ফের সামনে আসে। কখনও অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃত ছেলের কথা শুনিয়েছেন মা, কখনও নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন ভুক্তভোগী। তা ছাড়া কর্নাটকেও নতুন সেন্টার তৈরির খবর বা অন্যত্র ডিটেনশন কেন্দ্র তৈরি নিয়ে অমিত শাহের মন্ত্রকের নির্দেশিকাও সামনে আসে।
এই অবস্থায় ডিটেনশন কেন্দ্রের বাস্তব লুকোননি অমিত। বরং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে খণ্ডন করেই বলেছেন, ‘‘আমার তথ্য অনুযায়ী, দেশে একটিই ডিটেনশন কেন্দ্র আছে, অসমে।’’ সেই সঙ্গেই তিনি জানান, ওই কেন্দ্রটি মোদী ক্ষমতায় আসার আগেই তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন:বিতর্ক উস্কে এনপিআর খাতে টাকা, এনআরসি-র শুরু, বলছেন বিরোধীরা
বিরোধীদের অভিযোগ, এক এক বার এক এক রকম মন্তব্য করে মোদী-শাহ আসলে ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী ও অমিত শাহ দু’জনে মিলে জনতাকে বোকা বানাতে চাইছেন। কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন আজও বলেন, ‘‘এ তো স্পষ্ট যে, মোদী ও অমিত শাহ ইচ্ছে করে দুই সুরে কথা বলছেন। জনতা কাকে বিশ্বাস করবে?’’