—ফাইল চিত্র।
কেরলে পিনারাই বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন বিরোধীরা। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সোনা পাচার কাণ্ডে রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী-আমলারা জড়িত রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরটি সোনা পাচারকারীদের আখড়া হয়ে উঠেছে।
গত মাসে কেরলে বড় ধরনের সোনা পাচারকারী চক্রের হদিশ মেলে। কূটনৈতিক যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে আরব থেকে ৩০ কেজি সোনা আমদানির করার অভিযোগে স্বপ্না সুরেশ নামের এক মহিলাকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। স্বপ্না সুরেশের সঙ্গে সংযোগ থাকার অভিযোগে সিনিয়র আইএএস অফিসার তথা প্রাক্তন তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এম শিবশঙ্করকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে।
কিন্তু তার পরেও বিরোধীদের আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি পিনারাই বিজয়ন সরকার। বরং অভিযোগ ওঠে, শিবশঙ্করের ঘাড়ে সব দোষ চাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রীরা গা বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। বেশ কিছু দিন ধরেই তা নিয়ে সরব রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। বিজেপি নেতারাও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাহুলকে ঘিরে কংগ্রেসের বৈঠকে শোরগোল তুঙ্গে, নাটক প্রকাশ্যেও
তার মধ্যেই সোমবার বিধানসভায় পিনারাই বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন কংগ্রেস বিধায়ক ভিডি সতীশন। তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী যখন সব কিছু ঠিক রয়েছে বলে দাবি করছিলেন, তদন্তে আপত্তি নেই বলে জানাচ্ছিলেন, ঠিক সেইসময় প্রাক্তন প্রধান সচিব (প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি)-কে জেরা করছিল তদন্তকারী সংস্থা। আসলে শিবশঙ্করের উপর দায় চাপিয়ে নিজেদের গা বাঁচাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী-আমলারা।’’
কেরল বিধানসভার ১৪০টি আসনের মধ্যে এই মুহূর্তে সিপিআই (এম) নেতৃত্বাধীন লেফ্ট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ)-এর দখলে ৯১টি আসন রয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউডিএফ) দখলে রয়েছে ৪৫টি আসন। একটি করে আসন রয়েছে বিজেপি ও নির্দল প্রার্থীর দখলে। বাকি দু’টি আসন খালি পড়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে সেনা অভিযানে নামব, লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে চিনকে হুঁশিয়ারি রাওয়তের
কিন্তু পিনারাই বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে শরিক দল কেরল কংগ্রেস (এম)-এর সঙ্গে ঝামেলা বেধেছে ইউডিএফ-এর। আস্থাভোট থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরল কংগ্রেস (এম)। কিন্তু ভোটাভুটিতে অংশ না নিলে তাদের জোট ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউডিএফ।
১৫ বছর পর এই প্রথম কেরলে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন বিরোধীরা। এর আগে, ২০০৫ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চণ্ডীর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল।