বাবা পি চিদম্বরমের সঙ্গে কার্তি চিদম্বরম। —ফাইল চিত্র
৭৪ বছর পার করে ৭৫-এ পা দিলেন পালানিয়াপ্পন চিদম্বরম। কিন্তু এ বারের জন্মদিনটা তিহাড় জেলেই কাটাতে হল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে। আর সেই জন্মদিনে বাবাকে লেখা চিঠিতে কেন্দ্রকে বিঁধলেন কার্তি চিদম্বরম। মোদী-শিবম আলিঙ্গন, পীযূষ গয়ালের আইনস্টাইন-মাধ্যাকর্ষণ মন্তব্য, মোদী সরকারের ১০০ দিন, অর্থনীতির বেহাল দশা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক যাবতীয় রাজনৈতিক ইস্যুতেই কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়েছেন কার্তি। বাবাকে অবগত করিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের একাধিক আলোচ্য বিষয়। আর সব শেষে তাঁর বাবার গ্রেফতারকে ‘রাজনৈতক নাটক’ বলেও উল্লেখ করেছেন চিদম্বরম পুত্র।
এমনিতেও ধুমধাম করে জন্মদিন পালন করেন না চিদম্বরম। তবু এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। পরিবারের সঙ্গে নেই। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে তিহাড় জেলে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিহাড় জেল সূত্রে খবর, জন্মদিনও অনাড়ম্বর ভাবেই কেটেছে চিদম্বরমের। আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও কেন্দ্রকে আক্রমণ শানাতে বাবার জন্মদিনকেই হাতিয়ার করলেন কার্তি। বাবার উদ্দেশে দীর্ঘ একটি চিঠি লিখে পোস্ট করলেন টুইটারে।
চিঠিতে কার্তি লিখেছেন, ‘‘তোমাকে মিস করছি (আপ্পা)। তোমার অনুপস্থিতিতে আমরা ব্যথিত। আশা করেছিলাম, জন্মদিনে যদি বাড়িতে ফিরে কেক কাটতে পারতে।’’ জন্ম দিনের এই আক্ষেপ ছাড়া বলতে গেলে টাইপ করা দু’পাতার চিঠির প্রায় পুরোটাই রাজনৈতিক। লিখেছেন, ‘‘কোনও ৫৬ তোমাকে থামাতে পারবে না।’’ রাজনৈতিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ, এই ‘৫৬’ বলতে মোদীকেই বোঝাতে চেয়েছেন।
চন্দ্রযানের বিক্রম ল্যান্ডার মাটি ছোঁয়ার দিন ইসরোর কন্ট্রোল রুমে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে ইসরোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইসরো প্রধান কে সিবন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আলিঙ্গন নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। কার্তি এটাকে ‘নাটক’ বলে উল্লেখ করেছেন। সরকারের ১০০ দিন নিয়ে কার্তির কটাক্ষ, গত ছ’বছরে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ জিডিপি নিয়ে ১০০ দিন উদযাপন করছে মোদী সরকার।
আরও পডু়ন: প্রয়োজনে আমি নিজে যাব, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে মামলায় পরিস্থিতি নিয়ে বললেন প্রধান বিচারপতি
আরও পডু়ন: জননিরাপত্তা আইনে আটক ফারুক আবদুল্লা, কেন্দ্রকে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট
মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করেছিলেন আইনস্টাইন— পীযূষ গয়ালের এই মন্তব্য নিয়ে হাসাহাসি হয়েছে দেশ জুড়ে। কার্তির কটাক্ষ, ‘‘নিউটনের কাছ থেকে মাধ্যাকর্ণ সূত্র কেড়ে নিয়েছেন’ গয়াল। আবার গাড়ির বিক্রিতে ধস নামার জন্য নির্মলা সীতারামন যে তরুণ প্রজন্মের ওলা-উবরের দিকে ঝোঁককে দায়ী করেছিলেন, তা নিয়েও খোঁচা দিতে ছাড়েননি কার্তি চিদম্বরম। এর বাইরেও চিঠিতে উঠে এসেছে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি, এনআরসি থেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বরিস জনসন থেকে নাদালের প্রসঙ্গও।