পটনায় কেসিআরকে স্বাগত জানান নীতীশ কুমার।
সাংবাদিক বৈঠক করে বিরোধী ঐক্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আর তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের সামনে যা ঘটল, তাতে আরও এক বার বিরোধীদের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে, সেই নিয়ে প্রশ্ন করতেই উঠে গেলেন নীতীশ কুমার। তাঁকে জোর করে বসানোর চেষ্টা করে গেলেন কেসিআর। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠল, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির সামনে কী ভাবে টিকবে এই জোট?
বুধবার বিহারে গিয়েছিলেন কেসিআর। রাজধানী পটনায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। কেসিআরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তিনি কি নীতীশ কুমারের নাম প্রস্তাব করবেন? তখনই চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন নীতীশ। কেসিআর তাঁর হাত ধরে টেনে বলেন, ‘‘বসুন না।’’ তার পরেই সরাসরি কোনও জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কে বলল যে, আমি কারও নাম প্রস্তাব করলেই মানুষ মেনে নেবেন? এত তাড়া কিসের? আমাদের বিরোধীদের এক সঙ্গে বসে এই নিয়ে আলোচনা করতে হবে।’’
কেসিআর যখন এ সব বলছেন, তখনও দাঁড়িয়ে নীতীশ। অগত্যা তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধের সুরেই বলেন, ‘‘আমি বসে রয়েছি, আপনিও বসুন।’’ বাধ্য হয়ে বসে পড়েন নীতীশ। এর পর সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, তবে কি বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে রাহুলকে তুলে ধরবেন? জবাবে কেসিআর বলেন, ‘‘আপনি স্মার্ট হতে পারেন, কিন্তু আমি আরও স্মার্ট।’’ এই কথা শুনে আবারও উঠে দাঁড়ান নীতীশ।
ঘরে হাসির রোল ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেসিআর বলেন, ‘‘আমরা বিরোধীদের একজোট করার চেষ্টা করছি।’’ নীতীশ হাঁটা লাগিয়ে বলেন, ‘‘এ সবে আর পড়বেন না।’’
বিজেপি এই ভিডিয়ো প্রকাশ করে অভিযোগ করে, বিহারে ডেকে আসলে কেসিআরকে অপমান করেছেন নীতীশ। বিজেপি নেতা তথা তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় টুইটারে লেখেন, ‘‘কেসিআর কি এ ভাবে অপমানিত হতে পটনায় গিয়েছিলেন? তাঁর কথা শেষ করার পর্যন্ত সময় দিলেন না নীতীশ। কেসিআরের আবেদন শুনলেন না।’’
নীতীশ-ঘনিষ্ঠরা অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। জানিয়েছেন, সাংবাদিকরা বার বার একই প্রশ্ন করছিলেন বলে নীতীশ উঠে দাঁড়িয়েছেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই বিরোধী-শাসিত রাজ্যে ঘুরে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন কেসিআর। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর চেষ্টা করছেন তিনি। সেই সূত্রেই গিয়েছিলেন বিহারে, যেখানে নীতীশ গত মাসেই বিজেপির হাত ছেড়ে লালুপ্রসাদের দল আরজেডির সঙ্গে জোট করে সরকার গড়েছেন। সেই নীতীশের সঙ্গে বৈঠকের সময়েই প্রশ্নের মুখে বিরোধী-ঐক্য। বিজেপি নেতা সুশীল মোদী বলেন, ‘‘নীতীশকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে মানতেই চাননি কেসিআর।’’