রাজ্যে একের পর এক অপরাধ বেড়ে চলা এবং তা নিয়ে পরোক্ষে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দিকে জোট-সঙ্গী লালুপ্রসাদের আঙুল তোলার ঘটনা তো ছিলই। এরই পাশাপাশি, সরকারি দফতরের বিভিন্ন কাজে আরজেডি প্রধানের খবরদারি চলছিলই। এই সব ঘটনাগুলিকে নিয়ে দুই শরিকের টানাপড়েন ছিল অব্যাহত। ছিল বিবৃতি, পাল্টা-বিবৃতিও। আজ মকর সংক্রান্তির দিনে হঠাত্ই সে সবে জল ঢেলে দিলেন দুই শরিকের দুই প্রধান—নীতীশ ও লালুপ্রসাদ। ভাইয়ের কপালে দধি-তিলক দিয়ে বড় ভাই লালুপ্রসাদ সাংবাদিকদের জানিয়ে দিলেন, ‘‘অনেক কূটকচালি করেছ। বিজেপিও তুকতাক করছে। সব কিছুতেই আমার এই তিলক ভাইকে রক্ষা করবে।’’
আজ সকালে লালুপ্রসাদের বাড়ি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। মকর সংক্রান্তিতে বসে গেলেন চিড়ে-দই-তিলকূট খেতে। লালুপ্রসাদের বাড়িতে হাজির ছিলেন জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদব, সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগিও। গৃহকর্তা লালুপ্রসাদ ও গৃহকর্ত্রী রাবড়ী দেবী সকলকে চিড়ে-দই পরিবেশন করেন।
দ্বারভাঙাতে দুই ইঞ্জিনিয়ার হত্যাকাণ্ডের পরে লালুপ্রসাদ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার ভার ‘মুখ্যমন্ত্রীর উপরে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তার জেরে জেডিইউয়ের তরফে ‘মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার দরকার নেই’ বলে মন্তব্য করা হয়েছিল। এর পরে দুই শিবির থেকেই ‘বয়ানবাজি’ শুরু হয়। পরে লালুপ্রসাদ এবং নীতীশ কুমার, দুই নেতাই এই বিবৃতির লড়াই বন্ধের নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে লালুপ্রসাদ মোদীর পাকিস্তান নীতি নিয়ে আক্রমণ শানান। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই
মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পাকিস্তান নীতিতে মোদীর পাশে দাঁড়ান। লালুপ্রসাদের ছেলের হাতে থাকা স্বাস্থ্য দফতরের কাজের তদারকি করতে শুরু করেন লালুপ্রসাদ নিজে। এই সব নিয়ে দুই শিবিরের ভিন্ন মত সামনে আসায় সরকারের ভবিষ্যত্ নিয়ে যথারীতি প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
১০ নম্বর সার্কুলার রোডে লালু-রাবড়ীর বাড়িতে গিয়ে নীতীশ কুমার সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এ দিনই জেডিইউয়ের রাজ্য সভাপতি বশিষ্ঠ নারায়ণ সিংহের তরফে নিউ পটনা ক্লাবে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। লালু-নীতীশ, দু’জনে সেখানেও হাজির ছিলেন।