Nitish Kumar

নীতীশের লক্ষ্য কি দুর্বল কংগ্রেস, উঠল প্রশ্ন

গত দু’দিন বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার পরে আজ নীতীশ প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৮
Share:

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ফাইল চিত্র।

যে বিরোধী মহাজোট গড়তে তিনি উদ্যোগী, তা কোনও তৃতীয় ফ্রন্ট নয়, বরং তা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী জোট বলেই আজ দাবি করলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ফলে, প্রশ্ন উঠেছে বিহারে যে ভাবে কংগ্রেস জোট সরকারের সঙ্গী হিসাবে রয়েছে, জাতীয় পর্যায়েও কি সে ভাবেই দুর্বল কংগ্রেসকে দেখতে চাইছেন নীতীশ কুমার!

Advertisement

গত দু’দিন বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার পরে আজ নীতীশ প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে। পরে সাংবাদিক বৈঠকে নীতীশ দাবি করেন, বিরোধী দলগুলিকে এক সুতোয় যাতে গাঁথা সম্ভব হয়, সেই লক্ষ্যেই তাঁর সফর। নীতীশের কথায়, ‘‘প্রত্যেক বিরোধী নেতাই বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে একতা বাড়ানো এবং সেই একতার বার্তা যাতে দেশকে দেওয়া সম্ভব হয়, তা নিশ্চিত করার উপরে জোর দিয়েছেন।’’

নীতীশ এ বারের সফরে কংগ্রেস, বাম দলগুলি ছাড়াও হরিয়ানা আইএনএলডি নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করেন। হরিয়ানার রাজনীতিতে আইএনএলডি কংগ্রেস বিরোধী বলেই পরিচিত। ফলে তাঁর এই প্রচেষ্টা তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার চেষ্টা কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। যে সমীকরণে আসন্ন লোকসভায় আঞ্চলিক দলগুলি ভাল ফল করলে তাদের জোটকে সমর্থন করতে বাধ্য হবে কংগ্রেস। নীতীশ অবশ্য আজ স্পষ্ট বলেন, ‘‘তৃতীয় ফ্রন্ট নয়। এই জোট প্রধান বিরোধী দলের জোট।’’ ঘরোয়া ভাবে নীতীশ শিবির জানিয়েছে, অতীতে একাধিকবার তৃতীয় ফ্রন্টের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ব্যর্থ হয়েছে। তাই তিনি বিরোধী দলগুলির এমন ঐক্যবদ্ধ জোট চান যা বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। নতুবা বিজেপিকে হারানো কঠিন বলেই মনে করেন তিনি।

Advertisement

নীতীশের ওই বক্তব্য কংগ্রেসের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে বলেই মত রাজনীতির অনেকের। কারণ, নীতীশ বিরোধীদের একজোট করার প্রশ্নে উদ্যোগী হলেও জোটের প্রধান হিসাবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে মেনে নিতে আপত্তি রয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বের। খোদ রাহুলও গত রবিবার রামলীলার ময়দান থেকে বুঝিয়ে দেন, কংগ্রেস নিজের মতাদর্শ সামনে রেখে বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দেবে। নীতীশের আজকের বক্তব্য থেকে কংগ্রেসের একাংশ মনে করছে, বিহারের যেমন শক্তিহীন জোট সঙ্গী হিসাবে কংগ্রেস নীতীশের সঙ্গে রয়েছে, জাতীয় স্তরেও কংগ্রেসকে সেই ভাবে দেখতে চাইছেন তিনি। যদিও আজ প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে নীতীশ ফের বলেন, ‘‘জোটের মুখ কে হবেন, তা পরে ঠিক হবে। প্রথমে সকলের একজোট হওয়া প্রয়োজন। যদি পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এমন হয় যে জোটের জন্য কোনও মুখ দরকার, তখন তা ভাবা যেতে পারে।’’

বিরোধী ঐক্য দেখাতে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর হরিয়ানার ফতেবাদে জনসভার পরিকল্পনা নিয়েছে আইএনএলডি। যাতে এনসিপি-র শরদ পওয়ার, এসপি-র অখিলেশ যাদব, এনসি-র ফারুক আবদুল্লা, নীতীশ কুমার, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে ওই জনসভায় নীতীশ থাকবেন কি না, তা আজ স্পষ্ট করেননি তিনি। বৈঠকে তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু ছাড়াও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সে দিন মহালয়া থাকায় মমতা আসতে পারবেন না বলে আইএনএলডি শিবিরকে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement