—ফাইল চিত্র।
সুশান্ত সিংহের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে নীতীশ সরকারের অতি সক্রিয়তা বিহার নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই করা হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। সুশান্ত সিংহ নিজে রাজপুত। যদিও পদ্মাবতী বিতর্কের সময়ে কর্নি সেনাদের দৌরাত্ম্যে ক্ষুব্ধ হয়ে নামের শেষে রাজপুত লেখা ছেড়ে দেন। বছরের শেষে বিহারে ভোট। তাই ওই রাজ্যে ভোটের আগে সুশান্তের রাজপুত পরিচয়টি পরিকল্পিত ভাবে প্রচারে তুলে আনা হয়েছে। বিহারে বরাবরই জাতনির্ভর ভোট হয়ে থাকে। বিহারে রাজপুত সমাজের ভোট রয়েছে মাত্র চার শতাংশ। সংখ্যার হিসাবে কম হলেও, বিহারের ২৪৩ আসনের মধ্যে অন্তত ৪০ থেকে ৪৫টি আসনে নির্ণায়ক শক্তি হল রাজপুত ভোট। ফলে নীতীশ বা লালুপ্রসাদ দু্’জনেই ‘পিছিয়ে পড়া’ শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করলেও, সর্বদাই রাজপুত ভোট পাওয়ার প্রশ্নে ঝাঁপাতে পিছপা হননি। বর্তমানে বিহার বিধানসভায় প্রায় কুড়ি জনের কাছাকাছি রাজপুত বিধায়ক রয়েছে। তাই রাজপুত ভোট অন্য দিক সুশান্তের স্থানীয় পরিচয়—এই দুই আবেগকে কাজে লাগাতেই এতটা অতিসক্রিয় হয়েছেন নীতীশ কুমার বলেই মত বিরোধীদের।
নীতীশের ওই পদক্ষেপে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বিজেপির। বিহারে বিজেপির অন্যতম ভরসা হল ব্রাহ্মণ ও রাজপুত-এই দুই শ্রেণির উচ্চবর্ণের ভোট। ফলে বিহারে রাজপুত ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দেওয়ার দায় রয়েছে বিজেপির। অন্য দিকে মহারাষ্ট্রের এখন বিরোধী শিবসেনার সরকার। সরাসরি সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে না হলেও, সুশান্তের ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর সঙ্গে ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে পুত্র আদিত্য ঠাকরের। বালাসাহেব ঠাকরের নাতি বিষয়টি তাঁর
বিরুদ্ধে ওঠা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে সরব হলেও, সুযোগ ছাড়তে চায়নি বিজেপি। নীতীশ সুশান্তের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের আর্জি জানাতেই তা মেনে নেয় কেন্দ্র। রাজপুত ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি মহারাষ্ট্রে শিবসেনাকে চাপে রাখা যাবে ধরে নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: সুশান্তের ডায়েরির ছেঁড়া পাতা প্রকাশ্যে, তাতে লেখা...
আজ মুম্বইয়ে তাদের দফতরে সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর ভাই শৌভিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গত কাল তারা রিয়াকে ছ’ঘণ্টা ধরে জেরা করেছিল। তাঁকে ফের তলব করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশার দেহ?
সুশান্তের মৃত্যু মামলা বিহার থেকে মুম্বইয়ে নিয়ে আসার জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন রিয়া। তারই পরিপ্রেক্ষিতেই গত ৫ অগস্ট রিয়াকে ডেকে পাঠিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। রিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তাঁর আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে। সেই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১১ অগস্ট, মঙ্গলবার। ওই দিন রিয়াকে ফের ডেকে পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এ দিন সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে আপিল করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছে মুম্বই পুলিশ।