গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাত পোহালেই বিহার বিধানসভার প্রথম দফার ভোট। তার ২৪ ঘণ্টা আগেও ব্যক্তিগত আক্রমণ অব্যাহত যুযুধান দুই শিবিরে। সোমবারই নাম না-করে লালুপ্রসাদের ৯ সন্তানের কথা উল্লেখ করে নীতীশ খোঁচা দিয়েছিলেন লালু-পুত্র তথা বিরোধী জোটের সেনাপতি তেজস্বী যাদবকে। মঙ্গলবার পাল্টা খোঁচায় খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৬ ভাই-বোনের কথা উল্লেখ করলেন তেজস্বী।
প্রথম দফা ভোটের আগে সোমবার শেষ দিনের প্রচারে নাম না-করে লালু প্রসাদকে নিশানা করেন নীতীশ। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের ৮-৯টা ছেলেমেয়ে। মেয়েদের উপরে ওঁদের কোনও ভরসাই নেই। অতগুলো মেয়ের পরে ওঁদের একটা ছেলে হল। এই ধরনের বিহার ওঁরা করতে চেয়েছিলেন।’’ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লালু-রাবড়ী দেবীর অষ্টম সন্তানের পাল্টা জবাব এল, ‘‘আমার পরিবার নিয়ে বলতে গিয়ে নীতীশজি তো খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদীকেই নিশানা করেছেন! কারণ তাঁরাও তো ৬ ভাই-বোন। এ ধরনের কথা মহিলাদের এবং আমার মায়ের আবেগের প্রতি অপমান।’’
তেজস্বীর মতো চড়া সুরে না-হলেও এ দিন বিজেপি-জেডিইউ জোটকে এবং পরোক্ষে নীতীশের বক্তব্যকে বিঁধেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীও। বিরোধী মহাজোটের শরিক কংগ্রেসের হয়ে তারকা প্রচারক হিসেবে বিহারে সভা করার কথা ছিল সনিয়ার। কিন্তু শরীরের কারণে তা হয়নি। প্রথম দফা ভোটের আগের দিন এক ভিডিয়ো-বার্তায় সনিয়া বলেন, ‘‘বিহারের সরকার ক্ষমতার নেশা এবং অহংয়ের কারণে পথভ্রষ্ট হয়েছে। তাদের কথা এবং কাজ, দুই-ই খারাপ।’’
এ বারের ভোট প্রচারে বারেবারেই প্রচারের ময়দানে না-থাকা জেলবন্দি লালুপ্রসাদকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করেছেন নীতীশ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে লালু-পুত্র তেজস্বীর নেতৃত্বে মহজোটকে ঘিরে প্রবল উন্মাদনা এবং অন্য দিকে একদা জোটসঙ্গী চিরাগের নাগাড়ে আক্রমণে ক্রমাগত ধৈর্য হারিয়েই এ সব বলছেন আগাগোড়া ভদ্র রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত নীতীশ। যা আখেরে সুবিধা করে দিচ্ছে তেজস্বীকেই। তাঁর নেতৃত্বে মহাগঠবন্ধন এ বারের ভোটে জাতপাতের রাজনীতিকে দূরে ঠেলে মূল বিষয় করেছে বেকারত্বকে। যা চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি-জেডিইউ শিবিরের। জয় নিয়ে নিশ্চিত তেজস্বী এ দিন বলেছেন, দুই-তৃতীয়াংশ আসন পাবে মহাজোট। বেকারদের কর্মসংস্থানই মূল লক্ষ্য। সেই সঙ্গেই কেন্দ্রের কৃষি বিল বাতিল করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার বিহারের একাংশে যখন প্রথম দফার ভোটগ্রহণ চলবে, তখন পটনা, দ্বারভাঙা এবং মুজফ্ফরপুরে তিনটি সভা করবেন মোদী। কংগ্রেসের হয়ে রাহুল সভা করবেন পশ্চিম চম্পারণ এবং দ্বারভাঙায়।