উচ্চ শিক্ষায় খরচের ব্যাপারে চিনের থেকে ঢের পিছিয়ে ভারত। শুধু তা-ই নয়, নীতি আয়োগের টাস্ক ফোর্সের রিপোর্ট তুলে ধরল, দেশে উচ্চ শিক্ষার পরিস্থিতি বেশ করুণ। রিপোর্টের বক্তব্য, বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি দরকার, উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল সংস্কার। সঙ্গে উচ্চ শিক্ষায় সরকারের খরচ ও লাভের তুল্যমূল্য বিচারও বিশেষ জরুরি। দেশে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অঙ্ক (এই চারটির ইংরেজি আদ্যক্ষর মিলিয়ে সংক্ষেপে স্টেম) শিক্ষার প্রসারে কী কী করণীয়, তা নিয়ে একগুচ্ছ দাওয়াই রয়েছে ওই রিপোর্টে। কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স), সাইবার-সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, ‘ইভেন্ট ড্রিভেন বিজনেস ইকোসিস্টেম’ ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত বিশেষ কিছু বিষয় সমাজে প্রভাব ফেলছে। আগামী দিনে এগুলির প্রভাব অনেক বাড়বে। তাই এই বিষয়গুলির জন্য বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুপারিশ করেছে টাস্ক ফোর্স। বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করতে এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলারও সুপারিশ রয়েছে তাদের রিপোর্টে।
‘ইমার্জেন্স অব স্টেম এডুকেশন ইন ইন্ডিয়া’ নামে এই রিপোর্টটি যৌথ ভাবে তৈরি করেছেন বিবেকানন্দ ইনফর্মেশনাল ফাউন্ডেশন (ভিআইএফ) ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অধ্যাপকেরা। চাণক্যপুরীতে আজ ভিআইএফের ডিরেক্টর অরবিন্দ গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে এটি প্রকাশ করেন নীতি আয়োগের কর্তা ভি কে সারস্বত। তাঁর কথায়, ‘‘লোকে বলেন, দেশে প্রচুর স্নাতক, পিএইচডি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু ওই স্নাতক, পিএইচডিদের মান কী, সেটা আমরা জানি।’’ এর জন্য উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থার খামতিকেই দায়ী করে সারস্বত বলেন, ‘‘উচ্চ শিক্ষাকে অবহেলা করা মানে গোটা দেশের বৃদ্ধিকেই অবহেলা করা।’’
টাস্ক ফোর্সের সরকারি কর্তারা উচ্চ শিক্ষায় ব্যয়ে চিন ও ভারত কে কোথা দাঁড়িয়ে, তার একটা ছবি তুলে ধরেছেন রিপোর্টে। দেখা যাচ্ছে, শিক্ষায় ৫৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার খরচ করে চিন। তার মধ্যে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার যায় উচ্চ শিক্ষায়। সেখানে ভারত শিক্ষা খাতে মোট খরচ করে ১২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। তার থেকে উচ্চ শিক্ষায় বরাদ্দ হয় ৪৫০০ কোটি ডলার। ভারত মোট উৎপাদন তথা জিডিপির ৪ শতাংশ খরচ করে শিক্ষায়। তার মধ্যে ১ শতাংশ খরচ হয় উচ্চ শিক্ষায়। টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ, এটা অন্তত ১.৫ শতাংশ করা প্রয়োজন। এবং এই খাতে খরচ ও প্রাপ্ত সুবিধার তুল্যমূল্য বিচার আরও বিস্তারিত ভাবে করাটাও জরুরি।