কমিটিতে এনে সাবেক শরিক মমতাকে খুশি করার চেষ্টা মোদীর!

বাজপেয়ী জমানায় এনডিএ-র শরিক ছিলেন মমতা। চন্দ্রবাবু সদ্য এনডিএ ছেড়েছেন। দুই সাবেক শরিক দলের কান্ডারির মন জয়ে নরেন্দ্র মোদী আজ সচেষ্ট ছিলেন। কৃষির উন্নয়নের সঙ্গে কী ভাবে একশো দিনের কাজকে মেলানো যায়, তার রাস্তা খুঁজতে মোদী আজ সাত জন মুখ্যমন্ত্রীর একটি কমিটি তৈরি করেছেন। সাত মুখ্যমন্ত্রীর ওই দলে বিজেপি ও শরিক দলের মুখ্যমন্ত্রী পাঁচ জন। বাকি দু’জন মমতা ও চন্দ্রবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০৪:২৯
Share:

সাক্ষাৎ: নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পিনারাই বিজয়ন, চন্দ্রবাবু নায়ডু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এইচ ডি কুমারস্বামী। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

নীতি আয়োগের বৈঠকে মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করলেন দুই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রবাবু নায়ডু। আবার বৈঠকে এই দু’জনকেই পাশে টানাতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

রাজ্যের বিষয়ে অপ্রয়োজনে নাক গলানো, আর্থিক বঞ্চনা থেকে কেন্দ্রের একতরফা নীতি নির্ধারণ নিয়ে রবিবারের নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতা সরব হয়েছেন। তাঁকে সঙ্গত করেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী নায়ডু।

বাজপেয়ী জমানায় এনডিএ-র শরিক ছিলেন মমতা। চন্দ্রবাবু সদ্য এনডিএ ছেড়েছেন। দুই সাবেক শরিক দলের কান্ডারির মন জয়ে নরেন্দ্র মোদী আজ সচেষ্ট ছিলেন। কৃষির উন্নয়নের সঙ্গে কী ভাবে একশো দিনের কাজকে মেলানো যায়, তার রাস্তা খুঁজতে মোদী আজ সাত জন মুখ্যমন্ত্রীর একটি কমিটি তৈরি করেছেন। সাত মুখ্যমন্ত্রীর ওই দলে বিজেপি ও শরিক দলের মুখ্যমন্ত্রী পাঁচ জন। বাকি দু’জন মমতা ও চন্দ্রবাবু।

Advertisement

রবিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনের সংস্কৃতি কেন্দ্রে নীতি আয়োগের বৈঠক শুরুর আগে প্রথম যে ছবি প্রকাশ্যে আসে, তা হল চন্দ্রবাবু এবং এইচ ডি কুমারাস্বামীর সঙ্গে মমতাও এক মুখ হাসি নিয়ে কথা বলছেন মোদীর সঙ্গে। মধ্যাহ্নভোজের সময়ও মমতা-চন্দ্রবাবুর সঙ্গে বসে কথা বলেন মোদী।

বৈঠক থেকে বেরিয়েও মমতা মোদীকে সরাসরি আক্রমণ করেননি। কিন্তু কেন্দ্রের কাজের ধরনের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘আমি বলেছি, তোমরা কেন আলোচ্যসূচি ঠিক করবে? আমাদের উন্নয়নের বিষয় কেন আলোচ্যসূচিতে থাকবে না?’’ যে অভিযোগ মেনে নিয়েছেন নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারও।

মমতা বলেন, ‘‘তোমরা এখানে বসে নীতি নিয়ে নিলে। রূপায়ণ তো আমাদের করতে হয়। অপ্রয়োজনে নাক গলানো বন্ধ করতে হবে।’’ রাজ্যের ঋণের বোঝার সমস্যার প্রতি কেন্দ্র চোখ বুজে রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা শোধ হয়েছে। আরও ৪৬ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। আমাদের চলবে
কী করে?’’

চন্দ্রবাবু আজ অভিযোগ তুলেছেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলে দক্ষিণের রাজ্যগুলি বঞ্চিত হবে। তাঁকে সমর্থন করেন মমতা। তাঁর যুক্তি, ১৯৭১-এর বদলে ২০১১-র জনগণনা ধরে কেন্দ্রীয় করে রাজ্যের ভাগ ঠিক হলে যে সব রাজ্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ভাল ভাবে করতে পেরেছে, বঞ্চিত হবে তারাই।

মমতা-চন্দ্রবাবুর এই ক্ষোভও মেটানোর চেষ্টা করেছেন মোদী। সমাপ্তি বক্তৃতায় তিনি বোঝান, জনসংখ্যার দায়িত্ব তো নিতেই হবে। তবে ভাল কাজ করে যাতে বঞ্চিত হতে না হয়, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীদের পরামর্শ দিতে বলেন মোদী।

অন্ধ্রের বিভাজনের পর অন্ধ্রের জন্য আজ বিশেষ আর্থিক সুবিধার দাবি করেন চন্দ্রবাবু। মমতা ছাড়া তিনি পাশে পান নীতিশ কুমারকেও। তিনিও বিহারের বিশেষ তকমার দাবির প্রসঙ্গ তোলেন। তবে বিহারের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অপেক্ষাকৃত বেশি বলে তিনি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের শর্তে আপত্তি তোলেননি। কিন্তু ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’-য় ছোট চাষিরা সুবিধা পাচ্ছে না, ক্ষতিপূরণ পেতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। প্রধানমন্ত্রী মমতাকে কৃষি ও একশো দিনের কাজের কমিটিতে রাখলেও মমতাও কৃষকদের সমস্যা নিয়ে সরব হন। তাঁর যুক্তি, ‘‘কৃষকরা ব্যাঙ্ক ঋণ পান না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement