বাদল অধিবেশন চলাকালীন সংসদ চত্বরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম এক হাজার টাকার উপরে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়ে দিলেন, তিনিও ‘গৃহিণী’। কিন্তু রান্নার গ্যাসের দাম তাঁর হাতে নেই।
মোদী সরকার গরিবদের নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ দিচ্ছে। কিন্তু সিলিন্ডারের চড়া দামের জন্য গরিবরা একবার সিলিন্ডার ফুরিয়ে গেলে নতুন সিলিন্ডার কিনতেই পারছেন না। এ নিয়ে বিরোধী সাংসদরা প্রশ্ন করায় অর্থমন্ত্রী তাঁদের ধমকের সুরে বলেছেন, ‘‘গরিবদের সিলিন্ডারে সরকার ২০০ টাকা করে ভর্তুকি দিচ্ছে। নিজের এলাকায় গিয়ে গরিবদের সিলিন্ডারে ভর্তুকি পাইয়ে দিন।’’ সাধারণ মানুষের জন্য সিলিন্ডারে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করায় অর্থমন্ত্রী রাগত কণ্ঠে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমি আপনাদের চাহিদা মতো উত্তর দিতে পারব না।’’
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করলেই তিনি রেগে যাচ্ছেন কেন? নির্মলা সীতারামনের জবাব, ‘‘আমার কথা বলার স্টাইলটাই এ রকম। আমি মিষ্টি মিষ্টি করে কথা বলতে পারি না। সবাই এক পদার্থ দিয়ে তৈরি নয়। আমরা অন্য পদার্থ দিয়ে তৈরি।’’ এর আগে পেঁয়াজের দাম নিয়ে প্রশ্নের মুখে অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেছিলেন, তিনি পেঁয়াজ খান না। আজ ফের একই প্রশ্নে নির্মলা বলেছেন, ‘‘আমি পেঁয়াজ খাই বা না খাই, সেটা অপ্রাসঙ্গিক। আমরা টোম্যাটো, পেঁয়াজ, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।’’
লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় মোদী জমানায় জিনিসপত্রের দাম নিয়ে প্রশ্নের মুখে অর্থমন্ত্রী যুক্তি দিলেন, ইউপিএ সরকারের আমলেও যথেষ্ট মূল্যবৃদ্ধি ছিল। খাদ্যপণ্যে জিএসটি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তিনি বলেন, জিএসটি চালুর আগে বিভিন্ন পণ্যে এখনকার থেকেও বেশি হারে ভ্যাট আদায় করা হতো। দুধ থেকে পনিরে জিএসটি চাপানো নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অর্থমন্ত্রীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে জিএসটি চালুর আগে পনিরে ভ্যাটের হার অনেক বেশি ছিল।
লোকসভায় অর্থমন্ত্রীর জবাবের সময় বিরোধীরা ওয়াক-আউট করেছিলেন। রাজ্যসভাতেও অর্থমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে পনিরের জিএসটি-র সঙ্গে ভ্যাটের তুলনা টেনে আনায় তৃণমূল কংগ্রেস ওয়াক-আউট করেছে। বিরোধীদের বক্তব্য, করের বোঝা কমবে বলেই তো ভ্যাটের বদলে জিএসটি চালু হয়েছিল। অর্থমন্ত্রী এখন ভ্যাটের সঙ্গে জিএসটি-র তুলনা টানছেন কেন? লোকসভা, রাজ্যসভায় একাধিক বিজেপি সাংসদ নরেন্দ্র মোদীর বন্দনা করে দাবি করেছিলেন, মূল্যবৃদ্ধির কোনও সমস্যাই নেই। অর্থমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা তিনি অস্বীকার করছেন না। তবে জিএসটি-র ফলে গৃহস্থের উপরে বোঝা বাড়বে না। কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, অর্থমন্ত্রী যা-ই বলুন, বেকারত্ব-মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে শুক্রবার তারা গোটা দেশে রাস্তায় নামছে। বিক্ষোভের প্রস্তুতিতে আজ কংগ্রেস শীর্ষ নেতাদের বৈঠকও হয়েছে।