সেই সঙ্গেই মনমোহন সিংহের আমলের ডিজিপি, অর্থনৈতিক অবস্থা, বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারের তুলনাও টেনে নির্মলা বোঝান, ভারত সেই সময়কার থেকে অনেক ভাল পরিস্থিতিতে রয়েছে।
ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের একগুচ্ছ অভিযোগের পাল্টা হিসেবে শুধু মাত্র অর্থনীতি নিয়ে জবাব দেওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে আসরে নামাল বিজেপি। মনমোহনের শাসনকালের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে খোঁচা দিয়ে নির্মলার কটাক্ষ, ‘‘উনি আচমকাই দেশের অর্থনীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন, সেটা কি শুধু পঞ্জাব নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে?’’
দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা, বেকারত্ব নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে গত কালই তীব্র আক্রমণ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভুল নীতির জন্যই দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা হয়েছে। দেশের বেকারত্ব এবং অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়েও সরব অর্থনীতিবিদ মনমোহন বলেন, ‘‘এখন দেখলে দেখা যাবে, ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে এবং গরিব আরও গরিব হচ্ছে। চেহারা বদলালেই হাল বদলায় না।
সত্য সামনে আসেই।’’ দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের নীতির ভুলেই দেশে করোনাকালে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব লাগামছাড়া হয়েছে।
এ বার জবাবে নির্মলা বলেন, ‘‘উনি এমন এক প্রধানমন্ত্রী, যিনি ভারতকে ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশে পরিণত করার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। টানা বাইশ মাসেও তিনি মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এই প্রধানমন্ত্রী, যিনি চোখের সামনে দেখেছিলেন দেশের মূলধন বাইরে চলে যাচ্ছে। অথচ উনি এখন আচমকাই দেশের অর্থনীতি নিয়ে কথা বলছেন।’’
এর পরেই পঞ্জাব নির্বাচন নিয়ে সুর চড়িয়ে নির্মলা বলেন, ‘‘উনি সর্বস্তরের অগ্রগতির কথা বলেছেন। তা হলে পঞ্জাবে যখন লাভের জন্য টিকা বিক্রি করা হচ্ছিল, তখন তিনি কেন কথা বলতে পারেননি?’’
এখানেই থামেননি মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা। তাঁর বক্তব্য, শুধু মাত্র সমালোচনার জন্য একজন ‘শিক্ষিত প্রধানমন্ত্রী’র কাছ থেকে এই ধরনের মন্তব্য তিনি আশা করেননি। তিনি বলেন, ‘‘ডক্টর মনমোহন সিংহ, আপনার প্রতি আমার অগাধ সম্মান ছিল। তবে আপনার থেকে এটা আশা করিনি। শুধু মাত্র নির্বাচনী হিসেবের কথা ভেবে দেশের একজন শিক্ষিত প্রধানমন্ত্রী তথা অর্থনীতিবিদকে ভারত সম্পর্কে খারাপ কথা বলতে হবে? যে ভারত অতিমারি সত্ত্বেও বিশ্বের দ্রুত অগ্রগতি সম্পন্ন অর্থনীতি।’’
সেই সঙ্গেই মনমোহন সিংহের আমলের ডিজিপি, অর্থনৈতিক অবস্থা, বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারের তুলনাও টেনে নির্মলা বোঝান, ভারত সেই সময়কার থেকে অনেক ভাল পরিস্থিতিতে রয়েছে।
নির্মলা এ দিন নানা পরিসংখ্যান তুলে মনমোহনকে নিশানা করলেও কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির পাল্টা দিতে ছাড়েনি। তাদের বক্তব্য, মোদী জমানাতেই দেশে বেকারত্ব সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছে। পাশাপাশি মনমোহনের আমলের পেট্রল-ডিজ়েল-রান্নার গ্যাসের সঙ্গে বর্তমানের দামের তুলনা টেনে বিরোধীদের বক্তব্য,
মোদী সরকার এবং তার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দেশের গুটিকয় শিল্পপতির কথাই ভেবেছেন। সে কারণেই তাদের ঋণ মকুব করতে গিয়ে সরকারি ব্যাঙ্কগুলির এনপিএ-র পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে ব্যাঙ্কগুলির মূলধন কমেছে। সামগ্রিক ভাবে ক্ষতি হয়েছে গোটা অর্থনীতিরই।