ফাইল চিত্র।
মহাজ্ঞানী মহাজন, যে পথে করে গমন..
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পথেই হাঁটলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কের জবাব দিতে লোকসভা ও রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের সমালোচনাতেই বেশি সময় ব্যয় করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশের ভোটগ্রহণ শুরুর ঠিক আগে, বুধবার সন্ধ্যাতেও তিনি দেশের যাবতীয় সমস্যার জন্য কংগ্রেসকেই দায়ী করেছিলেন। আজ সেই পথে হেঁটে বাজেট নিয়ে বিতর্কের জবাবি বক্তৃতাতেও নির্মলা কংগ্রেসকেই নিশানা করলেন। ইউপিএ সরকার নয়, আরও পিছনে হেঁটে ১৯৯১-এর নরসিংহ রাওয়ের সময়কালকেও ‘অন্ধকাল’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
বাজেটে অর্থমন্ত্রী এখন থেকে স্বাধীনতার শতবর্ষ পর্যন্ত ২৫ বছরের সময়কালকে ‘অমৃতকাল’ আখ্যা দিয়ে তার জন্য মোদী সরকারের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেছিলেন। কংগ্রেসের শশী তারুর মোদী জমানাকে ‘অন্ধকাল’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তারই জবাবে অর্থমন্ত্রী কংগ্রেস আমলকে ‘আসল অন্ধকাল’ বলে নিশানা করেছেন। ইউপিএ-র সময়ের মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি, নীতিপঙ্গুত্বের অভিযোগ তুলেছেন। রাও জমানায় বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার তলানিতে ঠেকাতেই সরকার বাধ্য হয়ে আর্থিক সংস্কার করেছিল বলেও অভিযোগ তুলেছেন।
আজই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগামী অর্থ বছর, ২০২২-২৩-এ ৭.৮ শতাংশের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস করেছে। অর্থ মন্ত্রকের আর্থিক সমীক্ষায় আবার ৮ থেকে ৮.৫ শতাংশের বৃদ্ধির পূর্বাভাস করা হয়েছিল। বাজেটে আবার অর্থমন্ত্রী ১১.১ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি-সহ বৃদ্ধির পূর্বাভাস ধরে নিয়ে অঙ্ক কষেছেন। বৃদ্ধির হিসেবে এই গরমিল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আগামী বছরে মাত্র ৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি কী ভাবে ধরে নিচ্ছেন, সেই প্রশ্নও ওঠে। অর্থমন্ত্রী আজ ব্যাখ্যা দেন, আলাদা আলাদা হিসেবের পদ্ধতির জন্যই এই ফারাক। তবে তিনি মূল্যবৃদ্ধি-সহ বৃদ্ধি ও আসল বৃদ্ধির হারের মধ্যে ৩ থেকে ৩.৫ শতাংশের ফারাক ধরেই এগোচ্ছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, “কোভিডের ধাক্কায় আমাদের জিডিপি-র পতন সব থেকে বেশি হয়েছে। কিন্তু আমরা সব থেকে দ্রুত গতিতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছি। উন্নত, উন্নয়নশীল, ছোট, সব রকম অর্থনীতির তুলনায়, আমেরিকার তুলনাতেও ভারতের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর গতি বেশি।”
নির্মলা আজ কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেছেন, কোভিডের ধাক্কায় দেশের জিডিপি-র বহর ৯.৫৭ লক্ষ কোটি টাকা কমে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৬.২ শতাংশে আটকে রয়েছে। ইউপিএ-জমানায় ২০০৮-০৯-এ বিশ্বজোড়া আর্থিক সঙ্কটে অর্থনীতি ধাক্কা খেলেও এতটা সঙ্কোচন হয়নি। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির হার ৯.১ শতাংশে চলে গিয়েছিল। ইউপিএ সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মোদী তা নিশ্চিত করেছেন। ইউপিএ সরকারের আমলে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি, বাজেটে প্রথমে বিরাট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করে পরে খরচে ছাঁটাই করার দিকেও আঙুল তোলেন তিনি।
নির্মলা অভিযোগ তোলেন, ইউপিএ সরকার বিএসএনএল, এমটিএনএল-কে পথে বসিয়ে এখন কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করছে। এখন প্রশ্ন তুলেছে চাষিদের জন্য কী হচ্ছে? অথচ ইউপিএ সরকার ডব্লিউটিও-তে ২০১৩ সালে খাদ্যের অধিকার রক্ষায় খাদ্যশস্য কেনার নীতি জলাঞ্জলি দিয়ে চুক্তি করতে গিয়েছিল। মোদী সরকার তা না আটকালে ২০১৭ থেকে চাষিদের থেকে চাল কেনা বন্ধ হয়ে যেত। অভিযোগের প্রতিবাদে কংগ্রেস, ডিএমকে, আইইউএমএল ‘ওয়াক-আউট’ করে।