উচ্চবর্ণের ক্ষোভ নিয়ে কিছু বললেন? পেট্রল-ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে? রাফাল নিয়ে কী বক্তব্য?
পর পর প্রশ্ন ধেয়ে এল দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের উদ্দেশে। যিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন বিজেপির ‘প্রবীণ কর্মী’ হিসেবে। দিল্লির অম্বেডকর ভবনে আজ থেকে শুরু হওয়া বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে সভাপতি অমিত শাহ কী বললেন, তা জানাতে। কিন্তু এ সব ‘বেগতিক’ প্রশ্ন উঠতেই নির্মলার সহকর্মী মাইক টেনে বললেন, ‘‘এ সবের জবাব আমরা পরে দেব।’’ বলেই তড়িঘড়ি শেষ করে সাংবাদিক বৈঠক থেকে উধাও!
প্রশ্ন উঠল, ক’দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কেউ শৃঙ্খলা আনতে চাইলে তাকে স্বৈরতন্ত্র বলা হয়। আজ যা হল, সেটি শৃঙ্খলা না স্বৈরতন্ত্র? বিজেপি ‘কর্মী’ নির্মলা তো দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। রাফাল নিয়ে তো জবাব দিতে পারতেন। আসলে এই জমানায় রাফাল নিয়ে না প্রতিরক্ষামন্ত্রী কথা বলেন, না অর্থমন্ত্রী! রাতে কৃষকদের সহায়ক মূল্য নিয়ে কথা বললেও তা নিয়ে কোনও প্রশ্নের জবাবই দেননি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান।
কী বলতে এসেছিলেন নির্মলা? তিনি বললেন লোকসভা ভোটের জন্য সবাইকে অমিত শাহ কী মন্ত্র দিয়েছেন। অমিতের নিশানায় কংগ্রেস এবং বিরোধী জোট। বলেছেন, বিরোধীরা হতাশ। তাদের জোট শুধু চোখে ধুলো দিতে। মনমোহন সিংহ তাঁর দলকে অনুসরণ করতেন, নরেন্দ্র মোদী দলের নেতৃত্ব দেন। বিজেপি ‘মেকিং ইন্ডিয়া’ করছে, কংগ্রেস ‘ব্রেকিং ইন্ডিয়া’। অর্থনীতির হাল নিয়ে বিরোধীদের জবাব দিতেও বলেছেন অমিত।
এ সবের বাইরেও ভূরি ভূরি কথা বলেছেন অমিত। তাতে স্পষ্ট, রাহুল গাঁধীদের সক্রিয়তায় বিজেপি উদ্বেগে। সকালেই অমিত দলের নেতাদের বলেছেন, ‘‘আগামী সাত মাস ‘ভারতমাতা’ আর ‘পদ্ম’ ছাড়া কিছু ভাববেন না। বিজেপিকে ‘অজেয়’ দল করতে হবে, যাতে আগামী ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারে।’’
তফসিলি জাতি, ওবিসি তাস খেলতে গিয়ে পুরনো ভোটব্যাঙ্ক উচ্চবর্ণের গোঁসা হচ্ছে। তারা বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ভারত-বন্ধ’ করছে। ভারসাম্য আনতে মোদী-শাহ আঁকড়ে ধরেছেন অটলবিহারী বাজপেয়ীকে। দিল্লিতে ছড়িয়ে দিয়েছেন বাজপেয়ীর পোস্টার। মোদী আজ অটলের সঙ্গী লালকৃষ্ণ আডবাণীকেও মঞ্চে রেখেছেন। কথাও বলেছেন তিনি!
রাহুল কৈলাসে গিয়ে মোদীর হিন্দুত্বকে চাপে ফেলেছেন। পাল্টা আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সব হিন্দুকে একজোট হতে বলেছেন। অমিতও আজ নাগরিক পঞ্জি প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানরা এ দেশে এলে আশ্রয় দেওয়া হবে। বার্তা স্পষ্ট, মুসলিমদের নয়। কিন্তু মেরুকরণের উপর উন্নয়নের মোড়ক দিতে অমিত বলেছেন, যে ২২ কোটি পরিবার মোদী সরকারের উন্নয়নের সুফল পেয়েছেন, তাঁদের ঘরে গিয়ে মোদীর গুণগান করতে।
বিজেপির বৈঠককে নিশানা করে কংগ্রেসের বক্তব্য, আমজনতার সমস্যাকে পাত্তা দেয় না বিজেপি। অরবিন্দ কেজরীবালও আজ রাফাল নিয়ে সরব হয়েছেন।