কংগ্রেস নেতা কে আর রমেশ কুমারের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। ছবি: সংগৃহীত।
কর্নাটক বিধানসভায় ‘ধর্ষণ’ নিয়ে কংগ্রেস নেতা কে আর রমেশ কুমারের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। তাঁর মতে, ধর্ষণ নিয়ে এ ধরনের মন্তব্যেই বোঝা যায় যে কতটা ‘অসুস্থ মানসিকতা’র এ সমস্ত রাজনৈতিক নেতা। এ ধরনের জনপ্রতিনিধি থাকাও আম জনতার কাছে দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে ধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন রমেশ কুমার। বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার রমেশ বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘‘ধর্ষণ যখন অনিবার্য, তখন শুয়ে থেকে তা উপভোগ করা উচিত।’’ যদিও এই মন্তব্যের পর বিতর্ক ছড়াতেই ক্ষমা চেয়েছেন ওই কংগ্রেস বিধায়ক। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘ধর্ষণ নিয়ে যে অসতর্ক মন্তব্য বিধানসভায় করেছি, সে জন্য আন্তরিক ভাবে সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি। এ ঘৃণ্য অপরাধকে তুচ্ছ করা বা এতে আলোকপাত করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। ভবিষ্যতে শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকব।’ তবে রমেশের ক্ষমাপ্রার্থনার পরেও বিতর্ক থামেনি।
২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির একটি চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন আশার মেয়ে জ্যোতি সিংহ। ওই ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জ্যোতির মৃত্যু হয়। দেশ-বিদেশ তোলপাড় করা এই ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে চলে লাগাতার আন্দোলন। সে সময় নির্যাতিতার নামকরণ করা হয়েছিল ‘নির্ভয়া’। ওই ঘটনায় চার জন অপরাধীর ফাঁসি হলেও আদালতে নাবালক প্রমাণিত হওয়ায় ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল এক ধর্ষক।
রমেশ কুমারের মন্তব্যের পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আশা দেবী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ধর্ষণ নিয়ে এ সব নেতারা কী ভাবে মজা করেন?’’ তাঁর মতে, ‘‘এ ধরনের অপরাধের পর একটি মেয়ের জীবন পুরোপুরি তছনছ হয়ে যায়। এই সমস্ত নেতার জন্যই মেয়েদের হুমকি দেওয়া হয়, অপরাধ বেড়েই চলে। এঁরা অসুস্থ মানসিকতার লোক।’’
এ ধরনের জনপ্রতিনিধি থাকাও সমাজের কাছে দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন আশা। তিনি বলেন, ‘‘ধর্ষণের মতো অপরাধ হলে লোকেরা আগ বাড়িয়ে বলেন, অপরাধী নাবালক বা অশিক্ষিত। কিন্তু আমাদের বিধায়ক-সাংসদ- মন্ত্রীরা যখন এ ধরনের মন্তব্য করেন, তখন সে কথার মাধ্যমে তাঁদের মানসিকতা টের পাওয়া যায়। তিনি যে-ই হোক না কেন, তিনি যে দলেরই হন, মানুষ অনেক আশা করে তাঁকে আমাদের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য নির্বাচন করেছেন। কিন্তু যে মানুষ বলেন, ‘ধর্ষণ উপভোগ করুন’, তখন আমাদের এ ধরনের প্রতিনিধি থাকাটাই অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হয়ে পড়ে।’’