নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিত। —ফাইল চিত্র
নির্ভয়া কাণ্ডে চার দণ্ডিতকে নোটিস ধরাল সুপ্রিম কোর্ট। গত ৫ ফেব্রুয়ারি চার দণ্ডিতকে আলাদা ভাবে ফাঁসির দেওয়ার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চার দণ্ডিতকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি আর ভানুমতীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ। এ ছাড়া নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারির জন্য কেন্দ্র নিম্ন আদালতে যেতে পারে বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার।
বর্তমান আইন অনুযায়ী, একই অপরাধে দণ্ডিতদের ফাঁসি এক সঙ্গে কার্যকর করতে হয়। কিন্তু নির্ভয়া কাণ্ডে দণ্ডিতরা আলাদা আলাদা করে নানা ভাবে আইনি সংস্থান খুঁজে ফাঁসির প্রক্রিয়ায় দেরি করছে। এই অভিযোগ নিয়ে চার জনকে আলাদা করে ফাঁসির দাবি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র ও দিল্লি সরকার। কিন্তু গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি সেই আর্জি খারিজ করে দেয়।
এর পর একই আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় কেন্দ্র ও দিল্লির রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি আর ভানুমতি, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এ এস বোপান্নার বেঞ্চে। আলাদা ভাবে ফাঁসিতে ঝোলানো সংক্রান্ত দিল্লি হাইকোর্টের ওই রায় খারিজের দাবি জানান সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন, ‘‘তিন জনের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু অন্য দণ্ডিত পবন গুপ্ত এখনও প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায়নি।’’
আরও পড়ুন: নতুন রাজনীতি শুরু হল দিল্লিতে, জয়ের পর বার্তা কেজরীবালের
এজি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, শেষ মুহূর্তে পবন প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়ে ফের ফাঁসির প্রক্রিয়ায় দেরি করিয়ে দিতে পারে। এর পরই চার দণ্ডিতকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দেয় বিচারপতি আর ভানুমতির বেঞ্চ। তিনি বলেন, ‘‘অপরাধীরা জোট বেঁধে এই কাজ করছে। এটাই ওদের কৌশল।’’
এর আগে দু’বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেও নানা জটিলতায় ফাঁসি কার্যকর করা যায়নি। ৫ ফেব্রুয়ারি ওই রায়েই অপরাধীদের জন্য সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছিল, এই সময়ের মধ্যেই সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে তাঁদের। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ মঙ্গলবারই। ফলে নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারির জন্য সরকার ফের নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হতে আর কোনও বাধা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় মেরুকরণ নয়, উন্নয়নেই আস্থা রাখল দিল্লি
২০১২-র ডিসেম্বর দিল্লির রাস্তায় চলন্ত বাসে ২৩ বছরের তরুণীকে গণধর্ষণ এবং খুনের দায়ে বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত, মুকেশ সিংহ এবং অক্ষয় ঠাকুর সিংহকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। তার পর থেকেই চলছে দীর্ঘ আইনি লড়াই। ঘটনার আর এক অভিযুক্ত রাম সিংহ বিচার চলাকালীনই তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করেছিল। অন্য দিকে ঘটনার সময় নাবালক থাকা এক অভিযুক্তের বিচার হয়েছে জুভেনাইল আইনে। তিন বছরের সাজার মেয়াদ শেষে সে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে।