নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের ফাঁসিতে দেরির জন্য আপকে কাঠগড়ায় তুললেন প্রকাশ জাভড়েকর। —ফাইল চিত্র
হাইকোর্টে দিল্লির আপ সরকার জানিয়েছিল, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণেই ২২ জানুয়ারি নির্ভয়া কাণ্ডের সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসি সম্ভব নয়। হাইকোর্ট সেই যুক্তি না মেনে দোষীদের মৃত্যু পরোয়ানা বহাল রেখেছে। কিন্তু আপের সেই আর্জিকেই এ বার হাতিয়ার করল বিজেপি। ফাঁসিতে দেরির জন্য আপ সরকারের ‘গাফিলতি’কে কাঠগড়ায় তুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে জাভড়েকর বলেন, ‘‘আপ সরকারের অবহেলাতেই ২০১২ সালে নির্ভয়া ধর্ষণ-খুন কাণ্ডের দোষীদের ফাঁসিতে দেরি হচ্ছে। কেন আড়াই বছর ধরে দিল্লির সরকার দোষীদের প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোর জন্য নোটিস ধরায়নি।’’ বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট দোষীদের রায় সংশোধনের আর্জি খারিজ করার পরে নোটিস দিয়েছে দিল্লি সরকার।
আইনি পথে শেষ বিকল্প রায় সংশোধনের আর্জি। সেই আর্জিও সুপ্রিম কোর্ট ফিরিয়ে দিয়েছে। অন্য দিকে গত ৭ জানুয়ারি দিল্লির দায়রা আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে বলেছিল, ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টার সময়ে চার অপরাধী বিনয় শর্মা, মুকেশ কুমার, অক্ষয়কুমার সিংহ ও পবন গুপ্তের ফাঁসি হবে। আদালত চারজনকে আইনি পদক্ষেপের শেষ ধাপ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনীর আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের জন্য ১৪ দিন সময় দেয়।
আইন অনুযায়ী ফাঁসির আসামীর সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ হওয়ার পরেও ১৪ দিনের সময় দিতে হয়। সেই আইন অনুযায়ীই আপ সরকার আদালতে জানিয়েছিল, ২২ জানুয়ারি ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব নয়। কিন্তু আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে জানিয়ে দেয়, মৃত্যু পরোয়ানা জারির মধ্যে কোনও গলদ নেই। তবে দায়রা আদালতে মৃত্যু পরোয়ানা খারিজের আর্জি জানাতে পারে অভিযুক্তরা।
আবার আইন অনুযায়ী একই মামলায় একাধিক দোষীর ফাঁসি হলে তাদের এক সঙ্গেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। অর্থাৎ একই দিনে চার জনের ফাঁসি দিতে হবে। কিন্তু নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীরা এক সঙ্গে প্রাণ ভিক্ষার আর্জি বা রায় সংশোধনের আর্জি জানাচ্ছে না। ফলে ফাঁসি কার্যকর করতে ক্রমেই দেরি হচ্ছে। আইনজ্ঞ মহল মনে করছে, এই ভাবে আসলে ফাঁসি দেরি করার কৌশল নিয়েছে নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষী।