National News

২২ জানুয়ারি ফাঁসি সম্ভব নয়, বলল দিল্লি সরকার, ফেরাল হাইকোর্ট

দিল্লি হাইকোর্টে নিম্ন আদালতের মৃত্যু পরোয়ানার খারিজ করার দাবিতে মামলা দায়ের করে মুকেশ সিংহ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:৪৩
Share:

নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চার আসামী। —ফাইল চিত্র

ফের পিছিয়ে যেতে পারে নির্ভয়া কাণ্ডে চার দোষীর ফাঁসি। আদালতে দিল্লি সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, আইনের সমস্ত বিকল্প শেষ হওয়া এবং প্রাণভিক্ষার আর্জি রাষ্ট্রপতি খারিজ করার পরেও ফাঁসির আগে ১৪ দিন সময় দিতে হয়। তাই নিম্ন আদালতের নির্দেশ মতো ২২ জানুয়ারি ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব নয়। কিন্তু তার পরেও নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ৪ জনের অন্যতম মুকেশ সিংহের মৃত্যু রদের আর্জি খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার মধ্যে কোনও ভুল নেই।

Advertisement

গত ৭ জানুয়ারি চার জনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিল নিম্ন আদালত। পাতিয়ালা হাউস কোর্টের অতিরিক্ত সেশন জাজ জানিয়েছিলেন, ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় তিহাড় জেলে চার দোষীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। এর মধ্যে নির্ভয়া কাণ্ডের দুই সাজাপ্রাপ্ত আসামী সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) দায়ের করেছিল। মঙ্গলবার সেই আবেদন খারিজ হওয়ার রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় মুকেশ। তার পর মৃত্যু পরোয়ানা রদের আর্জি নিয়ে দ্বারস্থ হয় দিল্লি হাইকোর্টের। তার আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আর্জি মঞ্জুর করতে পারেন। তাই আগেভাগে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা বেআইনি।

বুধবার সেই মামলার শুনানিতে দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, জেল ম্যানুয়াল অনুযায়ী প্রাণভিক্ষার আর্জির সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু পরোয়ানা কার্যকর করতে পারে না সরকার। আবার প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হলেও তার পর ১৪ দিন সময় দিতে হয়। সরকারের পক্ষে আইনজীবী রাহুল মেহরা আদালতে জানান, মুকেশ রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতের প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছিল। সেই আর্জি খারিজ করে উপরাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ বার উপ রাজ্যপাল সেই আর্জি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠাবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক পাঠাবে রাষ্ট্রপতির কাছে।

Advertisement

তবে রাহুল মেহরা এও বলেন, আমরা চাই তাড়াতাড়ি প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ হোক। কিন্তু দোষীদের সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ হওয়া এবং সব আর্জি খারিজ হওয়ার পরেই ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করবেন তাঁরা।

মুকেশের আর্জি খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, মৃত্যু পরোয়ানা জারির মধ্যে কোনও ভুল নেই। এখন এ নিয়ে কোনও আপত্তি থাকলে বা পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকলে তার জন্য নিম্ন আদালতেই যেতে হবে আবেদনকারীকে। সেখানেই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জির বিষয়টি আদালতকে জানাতে হবে।

নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষী বিনয় শর্মা, মুকেশ কুমার, পবন গুপ্ত ও অক্ষয়কুমার সিংহকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। তার পর হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও সেই নির্দেশ বহাল রাখে। এর পর সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জিও খারিজ হয়ে যায়।

অন্য দিকে এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) জানিয়েছিল দুই সাজাপ্রাপ্ত বিনয় শর্মা ও মুকেশ কুমার। মঙ্গলবারই সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পর নিম্ন আদালতের মৃত্যু পরোয়ানার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে মুকেশ সিংহ। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জিও জানিয়েছে সে। মুকেশের আইনজীবীদের যুক্তি, রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আর্জি মঞ্জুর করতে পারেন। তাই মৃত্যু পরোয়ানা খারিজ করা হোক।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছরের নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও ভয়াবহ নির্যাতন করেছিল ছয় অভিযুক্ত। ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মারা যায় নির্ভয়া। অভিযুক্ত ৬ জনকেই পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীনই তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করেন রাম সিংহ। অন্য অভিযুক্ত অপরাধের সময় ছিল নাবালক। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড তাকে সর্বোচ্চ তিন বছর হোমে রেখে সংশোধনের নির্দেশ দেয়। সেই সাজার মেয়াদ শেষে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে তখনকার সেই নাবালক। অন্য দিকে চার দোষীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় দিল্লির বিশেষ আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement