নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিত। —ফাইল চিত্র
তিন বার মৃত্যু পরোয়ানা জারির করেও তা পিছিয়ে গিয়েছে। চতুর্থ তথা শেষ পরোয়ানা অনুযায়ী আগামিকাল শুক্রবার নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতের ফাঁসি কার্যকরের আগের দিন পর্যন্তও দোলাচল ছিল। তবে দিল্লির পটিয়ালা হাউস কোর্ট কার্যত জানিয়ে দিল পরোয়ানা আর পিছনোর প্রশ্নই নেই। ফলে অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা ও মুকেশ সিংহের ফাঁসি কাল হচ্ছেই, এমনটাই মনে করছে আইনজ্ঞ মহল।
দিল্লির পটিয়ালা হাউস কোর্টের জারি করা শেষ মৃত্যু পরোয়ানা অনুয়ায়ী শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় ফাঁসি হওয়ার কথা নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতের। কিন্তু তার আগের দিন পর্যন্ত আইনি লড়াই জারি রেখেছিল দণ্ডিতরা। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের আইনজীবীর দাবি ছিল, এখনও দণ্ডিতদের আইনি সংস্থান বাকি রয়েছে। তাই ফাঁসি পিছিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আর কোনও আইনি বিকল্প বাকি নেই।
আদালতে সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘কোনও আইনি বিকল্প আর বাকি নেই। পবন ও অক্ষয়ের প্রাণভিক্ষার আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। আমার বন্ধুরা আরও ১০০টা আবেদন করতে পারেন। কিন্তু তার কোনওটাই আইনি বিকল্প নয়।’’ এর পরেই দণ্ডিতদের আর্জি খারিজ করে দেন বিচারক।
আরও পড়ুন: করোনার জেরে বাতিল বহু উড়ান, ধুঁকছে একাধিক সংস্থা, পুনরুজ্জীবন প্যাকেজের ভাবনা কেন্দ্রের
তবে বৃহস্পতিবার এক নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল পটিয়ালা হাউস কোর্ট। এ দিন ফাঁসি কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশ পিছিয়ে না দেওয়ার এই নির্দেশের পরেই আদালত কক্ষের মধ্যেই জ্ঞান হারান মুকেশের স্ত্রী। কয়েক দিন আগে এই মহিলাই অক্ষয়ের সঙ্গে ডিভোর্সের মামলা করেছিলেন। তাঁর আর্জি ছিল, ফাঁসির আগেই ডিভোর্স চান তিনি। কিন্তু সেই আর্জি কার্যত খারিজ করে দেয় আদালত।
অন্য দিকে বৃহস্পতিবারই পবন গুপ্তের আর্জি খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। পবনের দাবি ছিল, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে অপরাধের সময় সে নাবালক ছিল। তাই জুভেনাইল আইন অনুযায়ী তার বিচার হোক। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: রাজ্যসভা জুড়ে বিরোধীদের ‘শেম, শেম’, তার মধ্যেই শপথ রঞ্জন গগৈয়ের
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে বাসের মধ্যে তুলে প্যারামেডিক্যাল পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও নির্মম অত্যাচার করে বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনার কয়েক দিন পর সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে ওই বাসের চালক-সহ মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে বাসের চালক রাম সিংহ বিচার চলাকালীন তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করেন। অন্য জন নাবালক হওয়ায় জুভেনাইল আইনে তার তিন বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। সেই সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ছাড়া পেয়ে গিয়েছে সেই অপরাধী।