অবশেষে: নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দিনক্ষণ ঘোষণার পরে দায়রা আদালতের সামনে নির্ভয়ার মা আশাদেবী ও বাবা বদ্রীনাথ সিংহ। মঙ্গলবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
তাঁর মেয়ের চার ধর্ষক-খুনির ফাঁসির পরোয়ানা (ডেথ ওয়ারেন্ট) দ্রুত জারি করার জন্য সম্প্রতি আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। তখন তিনি বিচারক সতীশকুমার অরোরার সামনেই কেঁদে ফেলে বলেছিলেন, ‘‘আমি সাত বছর ধরে বিচার চেয়ে ছুটে বেড়াচ্ছি।’’ বিচারক আশাদেবীকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন, তিনি আইন মেনে চলছেন। আজ দিল্লির দায়রা আদালত মৃত্যুদণ্ডের দিন-ক্ষণ ঘোষণা করার পরে আশাদেবী বলেন, ‘‘যা ঘটেছে তা ভুলতে পারব না। আর অপরাধীদের ক্ষমাও করতে পারব না। এই রায়ে বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরবে। এই ফাঁসি হলে দেশের মহিলাদের আইনের উপরে আস্থা ফিরবে বলেই মনে করি।’’ সাত বছর অপেক্ষার পরে আদালতে এই ‘জয়ের’ খবর পেয়েও অবশ্য শান্ত ছিলেন নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ সিংহ।
আজ ভরা এজলাসে শুনানি শুরুর সময়ে আইনজীবী এম এল শর্মা জানান, তিনি মুকেশ সিংহের প্রতিনিধি। কিন্তু আদালতবান্ধব বৃন্দা গ্রোভার জানান, মুকেশের প্রতিনিধিত্ব করার এক্তিয়ার শর্মার নেই। এর পরে শর্মাকে মুকেশের কাছ থেকে ওকালতনামা নিয়ে আসতে বলেন বিচারক। দুপুর সাড়ে তিনটে পর্যন্ত শুনানি স্থগিত রাখা হয়। তখন মুকেশের মা কাঁদতে কাঁদতে আদালতে ঢুকে আদালতের কাছে মৃত্যুদণ্ড মকুব করে দেওয়ার জন্য আবেদন করেন।
পরে শুনানি শুরু হলে সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘আসামিদের তরফে আদালত বা রাষ্ট্রপতির কাছে কোনও আবেদন পেশ করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনও খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফলে ডেথ ওয়ারেন্ট জারি করা যেতে পারে।’’ এর পরেই ডেথ ওয়ারেন্ট জারি করেন বিচারক। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চার আসামির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ভিডিয়ো কনফারেন্সিং রুমে সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। রায় ঘোষণার পরে আইনজীবী, নির্ভয়ার বাড়ির লোক এবং দণ্ডিতদের আত্মীয়েরা বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আদালতের বাইরে মুকেশের মা দাবি করেন, তাঁরা গরিব বলেই তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।
বিকেলে ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আশাদেবী। বলেন, ‘‘আমরা খুশি। ২২ জানুয়ারি আমাদের কাছে সব চেয়ে বড় দিন হতে চলেছে। ওই দিন আমাদের মেয়ে বিচার পাবে। বিচার পাবে দেশের অন্য মেয়েরাও।’’