অপরাধীদের ফাঁসির পর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আশাদেবী। ছবি: রয়টার্স।
আইনি ফাঁকফোকর গলে ফাঁসি পিছিয়ে দিচ্ছিল অপরাধীরা। চোখের সামনে তা দেখতে দেখতে আদালতে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। মনে সংশয় জন্মেছিল, আদৌ বিচার পাবেন তো? অপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর সেই সংশয় মিটল নির্ভয়ার মা আশাদেবীর। মেয়েকে বুকে টেনে নেবেন, সেই উপায় নেই। মেয়ের ছবি আঁকড়েই ফেললেন স্বস্তির নিশ্বাস।
২০১২-র দিল্লি গণধর্ষণের ঘটনায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিলেন আশাদেবী ও তাঁর গোটা পরিবার। শেষ মেশ শুক্রবার ভোরে তিহাড় জেলে অক্ষয় ঠাকুর (৩১), পবন গুপ্ত (২৫), বিনয় শর্মা (২৬) এবং মুকেশ সিংহ (৩২)—এই চার জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তাতেই স্বস্তি পেয়েছেন আশাদেবী।
এ দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আশাদেবী তিনি বলেন, ‘‘ভারতের বাকি মেয়েরাও যাতে ন্যায্য বিচার পান, তার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব আমরা। সুবিচার পেতে যে দীর্ঘ সময় আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে, তা অত্যন্ত পীড়াদায়ক ছিল। তবে শেষমেশ সুবিচার পেলাম। দানবগুলোকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। জানতে পেরে প্রথমেই মেয়ের ছবিটাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।’’
আরও পড়ুন: সূর্য ওঠার আগেই ফাঁসি হয়ে গেল নির্ভয়ার চার ধর্ষক-হত্যাকারীর
আরও পড়ুন: বিচার পেলেন নির্ভয়া, ন্যায় পেলেন কি?
ফাঁসি স্থগিতরাখতে গতকাল পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যায় অপরাধীরা। এমনকি মাঝরাতেও তা নিয়ে একদফা শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। যদিও শেষমেশ তাদের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। তার জন্য দেশের বিচারবিভাগ এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানান আশআদেবী। তিনি বলেন, ‘‘সরকার, বিচারবিভাগ প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই। অত্যন্ত সক্রিয় ভাবে সমস্ত আবেদন খারিজ করেছে আদালত।’’
তিহাড় জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফাঁসির আগে রাতে আর খাবার মুখে তোলেনি অপরাধীরা। রাত ভর জেগে ছিল তারা। জেলের অন্য কয়েদিরাও ঘুমায়নি। ভোর সাড়ে ৩টের সময় অপরাধীদের কুঠুরি থেকে বার করে ফাঁসিতে ঝোলাতে নিয়ে যাওয়া হয়।