নির্ভয়া কাণ্ডে চার দণ্ডিত। —ফাইল চিত্র।
দু’দিন আগেই দিল্লি হাইকোর্ট নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চার অপরাধীকে সাত দিন সময় দিয়েছে। জানিয়েছে, ফাঁসির বিরুদ্ধে যাবতীয় আইনি রাস্তার সুযোগ নিতে চাইলে, তা এর মধ্যেই নিয়ে ফেলতে হবে। এই সাত দিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে চার অপরাধীর নামে নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করতে রাজি হল না দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্ট। দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক ধর্মেন্দ্র রাণা আজ তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষের এ সংক্রান্ত দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, আইন যখন অপরাধীদের জীবিত থাকার অনুমতি দিয়েছে, তখন অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়া ‘ক্রিমিনালি সিনফুল’।
একই ভাবে সুপ্রিম কোর্টও এ দিন সাত দিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নাক গলাতে চায়নি। বুধবার দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছিল, চার অপরাধীকে একসঙ্গে ফাঁসি দিতে হবে। কারণ, একই অপরাধের জন্য তাদের একই শাস্তি হয়েছে। আইনি মারপ্যাঁচে যাতে বারবার ফাঁসি পিছিয়ে না-যায়, তার জন্য দিল্লি হাইকোর্ট অপরাধীদের এক সপ্তাহের মধ্যে যাবতীয় আইনি সুযোগ নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
দিল্লির ভোট এগিয়ে আসতে নির্ভয়া কাণ্ডের অপরাধীদের ফাঁসি দিতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবালের সরকারের বিরুদ্ধে এ নিয়ে ঢিলেমির অভিযোগও তুলেছে বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দিল্লি হাইকোর্টের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একসঙ্গে মামলা করেছিল কেন্দ্রীয় ও দিল্লির সরকার। দাবি ছিল, যাদের সামনে আইনের সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাদের কেন আলাদা ভাবে ফাঁসিতে ঝোলানো যাবে না? কেন এক অপরাধীর সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়নি বলে দলের বাকিদের ফাঁসি পিছিয়ে যাবে?
আরও পড়ুন: জয়পুরে পিটিয়ে খুন কাশ্মীরিকে
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি আর ভানুমতীর বেঞ্চে যুক্তি দেন, দেশের ধৈর্যের যথেষ্ট পরীক্ষা হয়েছে। শীর্ষ আদালতকে এ বিষয়ে আইন বেঁধে দিতে হবে। চার জনের মধ্যে তিন জনেরই প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। আর কোনও আইনি প্রক্রিয়া বাকি নেই। একমাত্র পবন গুপ্ত এখনও আদালতের রায় সংশোধনের মামলাই করেনি। মেহতা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘প্রশাসন কি অনির্দিষ্ট কাল অপেক্ষা করবে? ছক কষে টালবাহানা করে কি ফাঁসি নিয়ে অনির্দিষ্ট কাল অনিশ্চয়তা তৈরি করে রাখা যায়?’’
বিচারপতি ভানুমতী বলেন, ‘‘দিল্লির হাইকোর্ট তাদের এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে।’’ পবনের এখনও কিউরেটিভ পিটিশন দায়ের না-করার বিষয়ে বিচারপতি অশোক ভূষণ বলেন, ‘‘কাউকে আইনি সুরাহা নিতে বাধ্য করা যায় না। এটা ওদের সিদ্ধান্ত।’’ মেহতা দাবি করেন, ‘‘অপরাধীদের নোটিস জারি করে জানতে চাওয়া হোক, তারা কী করতে চায়।’’ কিন্তু বিচারপতিরা তাতে রাজি হননি। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, হাইকোর্টের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেই ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টোয় শুনানি হবে।