(বাঁ দিকে) নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া। অতুল সুভাষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অতুল সুভাষের মৃত্যু মামলায় গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া। তিন দিনের মধ্যে তাঁকে বেঙ্গালুরুর পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এই আবহে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নিকিতা এবং তাঁর পরিবার। অতুল আত্মহত্যা করার পর থেকেই নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে দু’টি পৃথক তদন্তকারী দল গঠন করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। উত্তরপ্রদেশেও পৌঁছে গিয়েছে বেঙ্গালুরু পুলিশের একটি দল। এরই মধ্যে আগাম জামিন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নিকিতারা। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, আগামী সপ্তাহে ওই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
বেঙ্গালুরু পুলিশ অতুল-মৃত্যু মামলার তদন্তে আরও গতি এনেছে। অনুসন্ধানের জন্য ইতিমধ্যে জৌনপুরে পৌঁছেছে বেঙ্গালুরু পুলিশের একটি দল। তিন দিনের মধ্যে নিকিতাকে বেঙ্গালুরুর মারাঠাহল্লি থানায় হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেঙ্গালুরু পুলিশের কমিশনার বি দয়ানন্দ জানিয়েছেন, পুলিশ তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে। পুলিশ এই মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
অতুল আসলে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। নিকিতার বাড়িও উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে। নিকিতা নিজেও একটি সংস্থায় কর্মরত। উভয়ের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বনিবনা ছিল না। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে এক পারিবারিক আদালতে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। এরই মধ্যে সম্প্রতি গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয় অতুলের দেহ। মৃত্যুর পর প্রায় ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। মিলেছে একটি ভিডিয়োও। সুইসাইড নোট এবং ভিডিয়োতে নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে চাপ তৈরির অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পারিবারিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও। যদিও কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক জানিয়েছে, পারিবারিক আদালত অত্যন্ত যত্নশীল ভাবে মামলাগুলি নিষ্পত্তির চেষ্টা করে।
অতুলের আত্মহত্যার পর তাঁর ভাই বিকাশ কুমার বেঙ্গালুরুর এক থানায় এফআইআর দায়ের করেন নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। অতুলকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। নিকিতা ছাড়াও তাঁর মা নিশা সিঙ্ঘানিয়া, ভাই অনুরাগ সিঙ্ঘানিয়া এবং অপর এক আত্মীয় সুশীল সিঙ্ঘানিয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করে পুলিশ। অতুলের মৃত্যু ঘিরে বিতর্কের আবহে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টেও একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে। পণপ্রথা এবং গার্হস্থ্য হিংসা বিরোধী আইনের অপব্যবহার রুখতে একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন স্থির করার আবেদন জানানো হয়েছে ওই মামলায়।