ফাইল ছবি
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ক্রমেই খারাপ হচ্ছে মহারাষ্ট্রের অবস্থা। বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করা হয়, সোমবার থেকে নাগপুরে পূর্ণ লকডাউনের পথে হাঁটছে প্রশাসন। এর পর পুণেতে করোনার সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কার্যকর করা হল রাত্রীকালীন কার্ফু। প্রশাসন সূত্রে খবর, এতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলে এই শহরেও পূর্ণ লক ডাউনের পথে হাঁটতে পারে উদ্ধব ঠাকরে প্রশাসন।
পুণেতে রাত ১১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত জারি থাকবে কার্ফু। ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই শহরে বন্ধ থাকবে স্কুল-কলেজ। রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে হোটেল ও পানশালা। শপিং মল রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে। সন্ধ্যাবেলায় বন্ধ থাকবে সমস্ত বাগান ও পার্ক। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার পুণের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ আলোচনায় বসেছেন শহরের সাংসদ, বিধায়ক ও মেয়রের সঙ্গে।
এরই মধ্যে আকোলা শহরে শুক্রবার রাত ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানেও লাফিয়ে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে নাগপুর শহরে ১৫ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা করেছে প্রশাসন। গত মাস থেকে নাগপুরে করোনা সংক্রমণ বাড়ছিল, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
করোনার সংক্রমণের বিচারে বৃহস্পতিবার চলতি বছরের সর্বোচ্চ অঙ্কে পৌঁছে যায় মহারাষ্ট্র। দৈনিক ১৪ হাজার ছুঁয়ে ফেলে সংক্রমণ। রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ১ লক্ষের গণ্ডি।
কয়েকদিন আগেই মহারাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন। চালু হয়েছে লোকাল ট্রেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুই ঘটনাই করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অণুঘটক হিসাবে কাজ করেছে। শুধু মুম্বই, পুণে বা ঠানে নয়, বিদর্ভ ও মারাঠওয়াড়ার মতো এলাকাতেও করোনা সংক্রমণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেযেছে। সব মিলিয়ে, এখন আশঙ্কার মধ্যেই রয়েছে উদ্ধব প্রশাসন। সেই কারণেই ছোট ছোট অঞ্চল নির্বাচিত করে সেখানে লকডাউন ঘোষণা করছে প্রশাসন।
অন্য দিকে, ক্রমেই বাড়ছে দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় তা ২৩ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত ১৪ হাজারের বেশি। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও। সাধারণ মানুষকে ‘সতর্ক’ এবং ‘জাগ্রত’ থাকার বার্তা দিয়ে কেন্দ্রের সতর্কবার্তা ‘অতিমারি এখনও শেষ হয়নি’।
বিষয়টি নিয়ে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভিকে পাল একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন। সেই বৈঠকেই উঠে এসেছে করোনা সংক্রমণ রোধে বিধি নিষেধ মেনে চলার কথা। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা এখন যে পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি, তাতে কোভিডের ছড়িয়ে পড়া রুখতে কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনার ফের প্রয়োজন পড়ছে। এই ভাইরাসকে হাল্কা করে দেখবেন না। অপ্রত্যাশিতভাবে তা আঘাত হানতে পারে।’’ দেশের যে সব এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে সেই এলাকার মানুষদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।