জেএমবি জঙ্গি নেতা কওসর।
বুদ্ধগয়ার ধারাবাহিক বিস্ফোরণ কী ভাবে সংগঠিত করা হয়েছিল তা আজ পুনর্নির্মাণ করে দেখাল ধৃত জঙ্গিরা। গতকাল কড়া প্রহরায় ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) গোয়েন্দারা কড়া নিরাপত্তায় বিস্ফোরণের ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত কওসর ওরফে বোমা মিজান, আদিল ওরফে আশাদুল্লা এবং তুহিন ওরফে মুস্তাফিজুর রহমানকে পটনা থেকে বুদ্ধগয়ায় নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি বুদ্ধগয়ার কালচক্র ময়দানে বিস্ফোরণে এই তিন জনই মূল পাণ্ডা বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচারের প্রেক্ষিতে বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাইলামার সভায় বিস্ফোরণের চক্রান্ত করা হয়েছিল বলে কওসর জেরায় স্বীকার করেছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
এ দিন তিন জনকে নিয়ে প্রথমে মহাবোধি মন্দিরের চার নম্বর গেট, মসজিদ রোড, মহাবোধি সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া এবং কালচক্র ময়দানে যান গোয়েন্দারা। সেখানে ভিআইপি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে বোমা লাগানো হয়েছিল, তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন তাঁরা। জেনারেটরের মধ্যে কী ভাবে বিস্ফোরক ঢোকানো হয়েছিল তাও দেখায় ধৃত জঙ্গিরা। গোটা প্রক্রিয়াটির ভিডিও করা হয়। এরপরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় জহানাবাদ জেলার কুতবনচক মহল্লায়। এখানেই বিস্ফোরণে ব্যবহৃত আইইডি তৈরি করেছিল কওসর। সেখানে নিজেদের কাপড়ের ফেরিওয়ালা পরিচয় দিয়ে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা থাকত। স্থানীয় এক বাসিন্দাকে ডেকে এনআইএ গোয়েন্দারা ধৃতদের শনাক্ত করান। ওই বাসিন্দা জানান, পাঁচ যুবকের মধ্যে ধৃত তিন জন ছিল। তিন জনকে নিয়ে স্থানীয় একটি হোটেলেও যাওয়া হয়। সেখানে ডিসেম্বর মাসে এক রাতের জন্য অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক উঠেছিল। বিস্ফোরণের সঙ্গে ওই যুবকের যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। হোটেল ম্যানেজার অবশ্য গোয়েন্দাদের জানান, ধৃতদের মধ্যে ওই যুবক নেই। এর পরে বিকেলে ধৃতদের ফের পটনায় নিয়ে আসা হয়।
বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর থেকেই বেপাত্তা কওসর ও তাঁর সঙ্গীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, মাঝে বার কয়েক সে পশ্চিমবঙ্গে এসেছিল। মাস খানেক আগে কেরলের মল্লাপুরমে এই তিন জনের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে এনআইএ। গত ৩ অগস্ট সেখান থেকে ধরা পড়ে তুহিন। তাকে জেরা করতেই বেঙ্গালুরু শহরের রামনগরে কওসরের ডেরার খোঁজ পান তাঁরা। সেখান থেকে বাংলাদেশি কওসর ওরফে বোমা মিজানকে গ্রেফতার করে এনআইএ। সেই সময়েই গ্রেফতার করা হয় আদিলকেও।