লোকসভায় বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।—ছবি পিটিআই
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘‘ভোটাভুটিতে ডিভিশন হলে বোঝা যাবে, কারা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছেন, কারা করছেন না!’’ আজ লোকসভায় সেই এনআইএ সংশোধনী বিল পাশ হল ২৭৮-৬ ভোটে। পরে তা রাজ্যসভায় পাশ হলেই বিদেশে ভারতীয় সম্পত্তি ও ভারতীয়দের উপর সন্ত্রাসী হামলার তদন্তে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) গোয়েন্দারা নামতে পারবেন বলে জানালেন অমিত শাহ।
সার্কের সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত চুক্তিতে এখনও স্বাক্ষর করেনি পাকিস্তান। তাই বিল-বিতর্কে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বা এমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি জানতে চান, পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মতো দেশে ভারতীয়দের উপরে হামলা হলে কী ভাবে কাজ করবে এনআইএ? জবাবে অমিত বলেন, ‘‘পাকিস্তান আজ না হোক কাল, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চুক্তিতে সই করতে বাধ্য হবে। তত দিন তো আর এনআইএ বিলকে ফেলে রাখা যায় না।’’ তাঁর দাবি, পাকিস্তান সন্ত্রাস দমনে কড়া পদক্ষেপ না করলে সে দেশ থেকে তৈরি সন্ত্রাস রোখার পদ্ধতিও ভারতের জানা রয়েছে।
দেশে সন্ত্রাসের ঘটনা বৃদ্ধির প্রশ্নে কংগ্রেস শিবিরকে রাজনৈতিক ভাবে নিশানা করতে ছাড়েননি শাহ। মনমোহন সিংহের প্রথম সরকারের আমলে সন্ত্রাস বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সরকারের দুর্বল নীতিকেই পরোক্ষে দায়ী করেন শাহ।
তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করতে গিয়ে ‘পোটা’ তুলে দেয় ইউপিএ সরকার। যার ফলে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সালে সন্ত্রাসের ঘটনা অনেকটাই বেড়ে যায়। পরে ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার পরে সেই ইউপিএ সরকারকেই এনআইএ আইন আনতে হয়। যারা গত দশ বছরে ৯০ শতাংশ মামলায় সাফল্য পেয়েছে।’’
আজ মূলত দু’টি বিষয়কে মাথায় রেখে প্রায় দশ বছর আগের এনআইএ বিলে সংশোধনী আনে নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রথমত, দেশের বাইরে কোনও ভারতীয় নাগরিক ও ভারতীয় সম্পত্তি সন্ত্রাসের শিকার হলে তা তদন্ত করতে পারবে এনআইএ। আর দ্বিতীয়ত, এনআইএ আদালতে মামলার চাপ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আদালতেও যেতে পারবে ওই সংস্থা। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নিম্ন আদালতে অতিরিক্ত বিচার নিয়োগের দাবি জানান। বিচারকের সংখ্যা না বাড়লে মামলা শুধু স্থানান্তরিত করে লাভ নেই বলেই মত কল্যাণের। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়োগকারী বিচারকদের বর্তমান সময়ের নানাবিধ নতুন অপরাধ যেমন, সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।’’
বাজেট সংক্রান্ত আলোচনা চলাকালীন ওই বিলটি নিয়ে সরকার বিতর্ক শুরু করায় সরব হন তৃণমূলের সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘‘বাজেট বিতর্কে বিভিন্ন মন্ত্রকের বরাদ্দ সংক্রান্ত আলোচনা এখনও বাকি। তাই সরকার এখন এই বিল পাশ করানোয় উদ্যোগী হতে পারে না।’’ স্পিকারের কাছে বিল বাতিলের দাবি তোলেন সৌগতবাবু।