কংগ্রেসের ডাকা বারো ঘণ্টার আগরতলা বন্ধে বিপর্যস্ত হল শহরের জনজীবন। তবে কোথাও তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বন্ধ সফল করতে কংগ্রেস শহরের বিভিন্ন জায়গায় পিকেটিং করেছিল। পুলিশ তা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিন্হা-সহ ৬৫জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আগরতলা পুর এলাকায় বর্তমান সম্পদ কর পর্যালোচনার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেই কংগ্রেস এই বন্ধের ডাক দিয়েছিল। বীরজিৎবাবু জানান, ‘‘কংগ্রেস আগরতলার পুর এলাকায় প্রস্তাবিত সম্পদ কর বৃদ্ধির প্রতিবাদ করছে। সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে, আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল পুরনিগম কর্তৃপক্ষকে। সে কথাতেও তাঁরা কান দেননি। তাই বাধ্য হয়েই হন্ধের পথে আমাদের যেতে হয়েছে।’’ পুরনিগম কর্তৃপক্ষ যদি আগরতলা পুর এলাকায় প্রস্তাবিত সম্পদ কর প্রত্যাহার না করে, তা হলে কংগ্রেস আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে আজ জানিয়ে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে বন্ধ শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
বন্ধের প্রভাবে শহরের স্বাভাবিক জনজীবন আজ প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায়। শহরের বাজারঘাট, দোকানপাট, বেসরকারি স্কুল, কেন্দ্রীয় সরকারের অফিস, ব্যাঙ্ক ইত্যাদি সবই প্রায় বন্ধ ছিল। সচিবালয়-সহ রাজ্য সরকারের অফিসগুলি অবশ্য খোলা ছিল। তবে রাস্তায় সরকারি পরিবহণের কোনও যানবাহন তেমন চোখে পড়েনি। কিছু রিকশা, বাইক, স্কুটার, বেসরকারি গাড়ি ঘোরাফেরা করেছে।
বন্ধের সমর্থনে শহরের বিভিন্ন স্থানে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা সকাল থেকেই পিকেটিং করেছেন। সচিবালয়ের সামনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে পিকেটিং-এ বসেন। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ সপ্তর্ষি জানান, ‘‘কংগ্রেস বিধায়ক বীরজিৎ সিন্হা, বিধায়ক গোপাল রায়-সহ ৬৫ জন বন্ধ সমর্থককে পুলিশ আটক করেছে।’ সপ্তর্ষি জানান, বন্ধ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে। বড় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও, সকালে বিজেপির এক নেতা তথা চিকিৎসক দিলীপ দাসের গাড়ি ভাঙচুর করে কিছু দুষ্কৃতী।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব বলেন, ‘‘কংগ্রেসের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনাই এই ঘটনায় প্রমাণ হচ্ছে।’’ সিপিএম বন্ধের বিরোধিতা করলেও মাঠে নেমে বাধা দেয়নি। বিজেপির অভিযোগ, সিপিএম কংগ্রেসের ডাকা বন্ধকে সমর্থন করেছে। তাই শহরে আজ অটোও চলতে পারেনি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর অবশ্য বলেন, ‘‘কংগ্রেসের আজকের বন্ধ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’’