প্রতীকী ছবি।
পোশাকি নাম ‘ক্যানডিডা অরিস’ বা ‘সি অরিস’। আদতে করোনাভাইরাসের আবহে তৈরি হওয়া এক নতুন ভয়াবহ সুপারবাগ। যা আদতে এক বিশেষ ধরনের ছত্রাক। আগামিদিনে‘সি অরিস’ বিশ্বজুড়ে অতিমারির কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
সম্প্রতি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এই সুপারবাগের সন্ধান পেয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অনুরাধা চৌধুরী এবং তাঁর সহকারীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, সুপারবাগ ‘ক্যানডিডা অরিস’ বা ‘সি অরিস’ অতিমারি হয়ে উঠলে বিশ্বজুড়ে ১ বছরেই প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে এই সুপারবাগের মোকাবিলা সম্ভব নয়। কারণ, ‘সি অরিস’ বাজার চলতি সমস্ত ওষুধ প্রতিরোধী।
অনুরাধা এবং তাঁর সহকর্মীরা আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মোট ৮টি স্থান থেকে ৪৮টি নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। সমুদ্র তীরের বালুকাভূমি, প্রবাল প্রাচীর, পাথুরে এলাকা, লবণাক্ত জলাভূমি এবং বাদাবন থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে তাঁরা জানিয়েছেন, মূলত সমুদ্রতটের বালি এবং লবণাক্ত জলাভূমি থেকে প্রাণঘাতী সুপারবাগের অস্তিত্ব মিলেছে। জলাভূমি অঞ্চলগুলিতে মানুষের যাতায়াত না থাকলেও সমুদ্রতীরের বহু অংশই জনাকীর্ণ। আর আশঙ্কা সেখানেই।
লবণাক্ত জলাভূমিতে পাওয়া ‘সি অরিস’-এর চরিত্র কিছুটা আলাদা বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। সেটি পুরোপুরি ওষুধ প্রতিরোধী নয়। ওই সুপারবাগটি মূল প্রজাতির বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যগুলি, পরিব্যক্ত রূপ। আমেরিকায় ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মূলত শরীরের ক্ষতস্থান থেকে সংক্রমণ ঘটে ‘সি অরিস’-এর।
২০০৯ সালে জাপানে প্রথম ‘সি অরিস’-এর অস্তিত্ব মেলে। পরবর্তীকালে ব্রিটেন-সহ কয়েকটি দেশের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় গবেষকেরা এর খোঁজ পেলেও ভারতে এই প্রথম দেখা গেল ‘সি অরিস’। তবে বাল্টিমোরের জন হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ-এর ‘মলিকিউলার মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি’ বিভাগ জানিয়েছে, এখনও এই সুপারবাগ মানুষ বা অন্য জীবদেহের উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারেনি।